কলকাতার খুচরো এবং পাইকারি বাজারে আজ মঙ্গলবার (Vegetable Prices) সবজির দামে মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই আবহাওয়ার প্রভাবে সবজির সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা দামের ওঠানামার অন্যতম কারণ।
মানিকতলা, গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট এবং কলেজ স্ট্রিটের মতো কলকাতার প্রধান বাজারগুলিতে সবজির দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে। ক্রেতাদের মধ্যে দাম নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও কিছু সবজির দাম কমায় সামান্য স্বস্তি ফিরেছে।আজকের বাজারের দর অনুযায়ী, কলকাতার খুচরো বাজারে বড় পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩৫-৩৮ টাকার মধ্যে রয়েছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কম।
ছোট পেঁয়াজের দাম ৬৫-৭০ টাকা প্রতি কেজি, যা গতকালের তুলনায় ২-৩ টাকা কমেছে। টমেটোর দাম স্থিতিশীল থাকলেও কিছুটা বেড়েছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ২২-২৫ টাকা। আলুর দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৩৫-৪০ টাকা প্রতি কেজি হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য চিন্তার কারণ। কাঁচা লঙ্কার দাম সামান্য কমে ৪০-৪৫ টাকা প্রতি কেজি, যা ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির খবর। বিটরুটের দাম ৪২-৪৫ টাকা প্রতি কেজি, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৩-৪ টাকা কম।
অন্যান্য সবজির মধ্যে, পটল ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৮০-৯০ টাকা, করলা ৫৫-৬০ টাকা এবং শসা ৫০-৬০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্ষার কারণে সবজি উৎপাদনকারী জেলাগুলিতে ফসলের ক্ষতি এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কিছু সবজির দাম বেশি।
তবে, শীতকালীন সবজি যেমন ফুলকপি (৪০-৫০ টাকা) এবং বাঁধাকপি (৩৫-৪৫ টাকা) বাজারে প্রচুর পরিমাণে এসেছে, যার ফলে এদের দাম তুলনামূলকভাবে কম। ধনেপাতার দাম ১৫০-২০০ টাকা প্রতি কেজি, যা উৎসবের মরশুমে বাড়তি চাহিদার কারণে বেশি।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে দক্ষিণবঙ্গের সবজি উৎপাদনকারী জেলাগুলিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে, যা সরবরাহে ঘাটতি সৃষ্টি করেছে। মানিকতলা বাজারের এক ব্যবসায়ী রমেশ মণ্ডল বলেন, “বৃষ্টির কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া থেকে সবজির সরবরাহ কমে গেছে।
এছাড়া, ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে, যা দামের উপর প্রভাব ফেলছে।” তবে, সরকারি উদ্যোগে সুফল বাংলার স্টলগুলিতে সবজির দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সুফল বাংলায় আলু ৩০-৩৫ টাকা এবং পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সরকারি হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও খুচরো বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে, যা সবজির সরবরাহে আরও প্রভাব ফেলতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, বৃষ্টি কমলে সরবরাহ বাড়বে এবং দাম কিছুটা স্থিতিশীল হবে। তবে, ক্রেতাদের জন্য পরামর্শ, বাজারে যাওয়ার আগে সর্বশেষ দামের তথ্য জেনে নেওয়া এবং প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে কেনাকাটা করে বাজেট নিয়ন্ত্রণ করা।
দুর্গাপূজার আগে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি
আগামী কয়েকদিনে আবহাওয়ার উন্নতি হলে সবজির দাম কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, বর্তমানে কলকাতার বাজারে সবজির দাম সাধারণ মানুষের পকেটে চাপ সৃষ্টি করছে। সরকারি স্তরে সুফল বাংলার মতো উদ্যোগগুলি আরও জোরদার করা হলে ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।