নিত্যদিনের জীবনে ট্রাফিক পুলিশের(Traffic Police) সঙ্গে চালকদের সংঘাত অনেকটা অভ্যস্ত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরের রাস্তায়। নিয়মভঙ্গের অভিযোগে মাঝ রাস্তায় গাড়ি আটকানো, এমনকি লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার ঘটনাও প্রায়শই ঘটছে। এবার এই পরিস্থিতি ঘিরেই কড়া প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ এক মামলার শুনানিতে মন্তব্য করে, ট্রাফিক আইনভঙ্গের ক্ষেত্রে পুলিশের পদক্ষেপ যদি নিয়মের পরিপন্থী হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি আদালত জানিয়েছে, লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার নির্দিষ্ট নিয়ম কী— সে সম্পর্কে রাজ্য সরকার ও পুলিশের স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। এর জন্য রাজ্য ও কলকাতা পুলিশকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে আদালত। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের হাতে হেনস্থার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল খোদ এক আইনজীবী। তাঁর দায়ের করা মামলাতেই এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের মার্চে। কলকাতার এজেসি বোস রোড ও খিদিরপুর রোডের সংযোগস্থলে ওই আইনজীবীর গাড়ি আটকায় এক ট্রাফিক পুলিশ কর্মী। চালকের লাইসেন্সও কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর সেই আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাই ওই মামলায় ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেয়নি হাইকোর্ট। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে গোটা রাজ্যে ট্রাফিক পুলিশের প্রশিক্ষণ চায় আদালত।
তবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আদালতের পরামর্শ, সকল ট্রাফিক পুলিশকে সঠিক আইনজ্ঞান ও ভদ্র ব্যবহার শেখানো আবশ্যিক। পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধ বজায় রেখে যেন তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করেন, সে বিষয়েও সতর্ক করেছে আদালত। এই রায়ের কপি পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক)-কে।