একুশের মঞ্চেই অভিষেক-কল্যাণের ‘কানে-কানে কথায়’ তৃণমূলে শুরু জোর জল্পনা?

জল্পনায় জল ঢেলে একুশের মঞ্চে (21st July) স্বমহিমায় অভিষেক। লোকসভার পরপরই শারীরিক কারণে সাময়িক বিরতি নিয়েছিলেন (21st July)। ধর্মতলার মেগা শো-এর মঞ্চে (21st July) আবারও…

জল্পনায় জল ঢেলে একুশের মঞ্চে (21st July) স্বমহিমায় অভিষেক। লোকসভার পরপরই শারীরিক কারণে সাময়িক বিরতি নিয়েছিলেন (21st July)। ধর্মতলার মেগা শো-এর মঞ্চে (21st July) আবারও রাজনীতির লাইম লাইটে ফিরে এলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। ধর্মতলার মঞ্চে (21st July) অভিষেকের সঙ্গে কল্যাণ-সৌগতের নিভৃতে কথায় নতুন জল্পনার অঙ্ক ছড়িয়েছে।

এদিন সকালে বারোটার কিছুটা আগে ধর্মতলার সভামঞ্চে পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিষেক। তারপরেই খালি পায়ে ১৯৯৩ সালের একুশে জুলাইয়ের শহীদ তৃণমূল কর্মীদের শহীদ স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। নতজানু হয়ে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করতে দেখা যায় তাঁকে। এরপরই অভিষেক পৌঁছে যান মূল মঞ্চে।

   

উপস্থিত জনসমুদ্রে তখন যেন আবেগের বিস্ফোরণ ঘটেছে। মঞ্চে উঠেই এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে হাঁটতে হাঁটতে অভিষেক হাত নাড়াতে থাকেন তৃণমূল সমর্থকদের বিপুল জমায়েতকে লক্ষ্য করে। এরপরেও যেন চমকের কিছুটা হলেও বাকি ছিল।

রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এরপর শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করান অভিষেককে। সে সময় প্রথম সারিতে বসে থাকা প্রায় সমস্ত সাংসদ এবং বিধায়করাই অভিষেকের সম্মানে উঠে দাঁড়ান। এরপর কুশল বিনিময়ের পর অভিষেক এগিয়ে যেতেই তাঁর পথ আটকান বর্ষিয়ান সাংসদ সৌগত রায়।

দুজনের মধ্যে নিভৃতে কিছু কথোপকথন হয়। এরপর সদ্য জয়ী সাংসদ কীর্তি আজাদ এবং ইউসুফ পাঠানের সাথে কুশল বিনিময় করেন অভিষেক। কিন্তু তারপরে এল বড়সড় চমক। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছুক্ষণ অভিষেকের সাথে কথা বলেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে। অভিষেককে সে কথা মন দিয়ে শুনে উত্তরও দিতে দেখা যায়।

রাজনৈতিক মহলের কাছে এই কল্যাণ-অভিষেক কথোপকথন যথেষ্টই ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। তৃণমূলের অভ্যন্তরে মাস কয়েক আগেও নবীন প্রবীণ বিতর্ক রীতিমতন জোরদার হয়ে উঠেছিল। বছরের শুরুতে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সেই বিতর্ক যেন জনসমক্ষে চলে আসে। সে সময় নবীনদের সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। অপরদিকে প্রবীনদের গুরুত্ব নিয়ে জোর সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে আইনজীবী তথা শ্রীরামপুরের সংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার সঙ্গেই ব্যাটিং করেছিলেন সৌগত রায়ও। কুনাল-কল্যাণ বিবাদ তখন যেন প্রতিদিনই খবরের শিরোনামের অংশ।

কিন্তু লোকসভা জয়ের পর, সেই সমীকরণ কী বদলে গেল? বিরোধীরা বলতেন তৃণমূলের দুটি লবি। মমতা এবং অভিষেক এই দুই গোষ্ঠীতে আড়াআড়ি বিভক্ত গোটা তৃণমূল শিবির, এমনটাই দাবি তাদের। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দলের সংগঠনের রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে তীব্র মতানৈক্য আছে। শোনা যায়, তারপরেও লোকসভায় বিপুল জয়ে অভিষেকের অবদান একপ্রকার মেনেই নিয়েছেন সবাই।

একুশে জুলাইয়ের পোস্টারে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ছবি না থাকাটা অনেকেরই চোখে লেগেছিল। কিন্তু ধর্মতলায় অভিষেকের উপস্থিতি সেই সমস্ত কিছুকেই যেন দমকা হাওয়ায় উড়িয়ে দিল। এমনকী প্রবীণ সাংসদদের এই উষ্ণ অভ্যর্থনা তৃণমূলের অভ্যন্তরে অভিষেকের বিজয় যাত্রাকেই যেন ইঙ্গিত করছে। ধর্মতলার শহীদ সমাবেশ কার্যত তৃণমূলের বিজয় সমাবেশও বটে। আর সেই মঞ্চে উপস্থিত হওয়া মাত্রই অভিষেকের এই অভিবাদন পাওয়া দলে তাঁর একক আধিপত্যেরই ইঙ্গিত দিল? আপাতত সেই সম্ভবনাতেই অঙ্ক মেলাচ্ছেন বঙ্গের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।