কলকাতার ক্রিস্টোফার রোডে আবারও এক নির্মীয়মাণ বহুতল হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে, যা শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। গতকাল কামারহাটিতে এমনই এক নির্মীয়মাণ বহুতল হেলে পড়েছিল, যেখানে চায়না কোম্পানিকে দিয়ে সোজা করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সেজন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আর এবার আবার এমন ঘটনা ঘটেছে কলকাতার এই ক্রিস্টোফার রোডে, যা আরও একবার শহরের ভবন নির্মাণের নিয়মকানুন এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা পৌরসভার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ক্রিস্টোফার রোডে। সেখানে একটি বহুতল নির্মাণ কাজ চলছিল, আর এই নির্মীয়মাণ ভবনটি হেলে পড়েছে পাশের একটি বহুতলের গা ঘেঁষে। আশেপাশের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন, কারণ ভবনের পাশেই বসবাসকারী মানুষদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন ভবনটি এমনভাবে হেলে পড়েছে যে, পাশের ভবনের সাথেও কোনও গ্যাপ নেই বললেই চলে, যা এক ধরনের বিপদ সংকেত।
এলাকার কাউন্সিলর সন্দীপন সাহা এই ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন, “স্থানীয় সূত্রে খবর আসে বিল্ডিংটি বেঁকে গিয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টকে জানাই বিষয়টি। তারা এসে স্পটে পর্যবেক্ষণ করেছে। আমরা যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “ডিপার্টমেন্ট মেয়রকে জানিয়ে থাকলেও সে বিষয়ে আমি কিছু নিশ্চিত বলতে পারব না। কিন্তু বাঘাযতীনের ঘটনার পরও প্রোমোটাররা সতর্ক হচ্ছে না, আর এই ধরনের সস্তা কাজের জন্য ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে স্থানীয়রা।”
এই ঘটনাটি নিয়ে এলাকাবাসীরা প্রচণ্ড চাঞ্চল্যের মধ্যে আছেন। তাঁরা দাবি করছেন, এর আগে কামারহাটির মতো আরও কয়েকটি জায়গায় এমন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন ধরনের দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নির্মাণ কাজের মান নিয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, যদি ভবন নির্মাণের কাজ যথাযথভাবে না করা হয়, তবে ভবনগুলি হেলে পড়া বা ভেঙে পড়ার মতো বিপদ ঘটতে পারে, যা স্থানীয়দের জীবনঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
নির্মাণকাজে গাফিলতি এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা অবহেলার কারণে শুধু শহরের বাসিন্দারা নয়, কলকাতা পৌরসভারও এর পরিণতি নিয়ে ভাবতে হবে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যদি না থামানো যায়, তবে তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির প্রতি আহ্বান, তারা যেন নির্মাণ সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে, যাতে ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর না ঘটে।