কলেজ স্ট্রিটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি পোড়ানোর একটি ঘটনা রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে (Kunal Ghosh)। স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এসএফআই)-এর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা প্রকাশ্য রাস্তায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পুড়িয়েছে।
কলেজ স্ট্রিটে SFIর আট দশটা বিপথগামী মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পোড়ালো। এই ছেলেমেয়েগুলি মরিচঝাঁপি, সাঁইবাড়ি, বউবাজার বিস্ফোরণ, বিজনসেতু, নেতাই, নানুর, কোচবিহার, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, বানতলা, ধানতলাসহ অসংখ্য গণহত্যা, হামলা, খুন, ধর্ষণের খলনায়কদের উত্তরসূরি। যদি ভিডিওটি ঠিক হয়, তাহলে… pic.twitter.com/R9Pu8agNYv
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) June 26, 2025
এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh) তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি এই ঘটনার পেছনে এসএফআই-এর কিছু “বিপথগামী” সদস্যকে দায়ী করেছেন এবং তাদের মরিচঝাঁপি, সাঁইবাড়ি, বউবাজার বিস্ফোরণ, বিজনসেতু, নেতাই, নানুর, কোচবিহার, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, বানতলা, ধানতলাসহ বিভিন্ন গণহত্যা, হামলা, খুন ও ধর্ষণের ঘটনার “খলনায়কদের উত্তরসূরি” হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই অভিযোগ রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
প্রতিরক্ষা জোরদার করতে এবার ভারতের পাশে বেলারুশ
ঘটনার বিবরণ
কলেজ স্ট্রিট, (Kunal Ghosh) কলকাতার শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই এলাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন বা প্রতিবাদমূলক কর্মকাণ্ড নতুন নয়। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পোড়ানোর মতো ঘটনা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এসএফআই-এর কিছু সদস্য মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তবে, এই ভিডিওর সত্যতা এখনও স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh) দাবি করেছেন, যদি ভিডিওটি সত্যি হয়, তবে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক তীব্র হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এই ঘটনাকে “অগণতান্ত্রিক” এবং “অপমানজনক” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে, এসএফআই-এর নেতারা এখনও এই ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, ছাত্র সংগঠনের একাংশের দাবি, এই ধরনের প্রতিবাদ তাদের রাজনৈতিক অধিকারের অংশ, যদিও তারা আইন ভঙ্গের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কুনাল ঘোষের অভিযোগ ও ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ
কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh) তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টে এসএফআই-এর সদস্যদের “বিপথগামী” হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তাদের পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসের বেশ কিছু বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
তিনি মরিচঝাঁপি (১৯৭৯), সাঁইবাড়ি (১৯৭০), বউবাজার বিস্ফোরণ, নেতাই (২০১১), নানুর, কোচবিহার, সিঙ্গুর (২০০৬), নন্দীগ্রাম (২০০৭), বানতলা, ধানতলাসহ বিভিন্ন গণহত্যা, হামলা, খুন ও ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনাগুলো পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে সিপিআই(এম)-এর শাসনকালের সঙ্গে যুক্ত, এবং কুনাল ঘোষের দাবি, এসএফআই-এর বর্তমান সদস্যরা সেই “খলনায়কদের উত্তরসূরি”।
মরিচঝাঁপি গণহত্যা, যেখানে ১৯৭৯ সালে উদ্বাস্তুদের উপর পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, এবং নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের ঘটনা, যেখানে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা হয়েছিল, এখনও রাজনৈতিক বিতর্কের বিষয়।
কুনাল ঘোষের (Kunal Ghosh) এই অভিযোগের মাধ্যমে তিনি এসএফআই-এর বর্তমান কর্মকাণ্ডকে এই ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। তবে, এই অভিযোগগুলোর বাস্তবতা ও প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ এই ঘটনাগুলো বর্তমান প্রজন্মের এসএফআই সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নাও হতে পারে।
আইনি ব্যবস্থার দাবি (Kunal Ghosh)
কুনাল ঘোষ তাঁর পোস্টে বলেছেন, যদি ভিডিওটি সত্যি হয়, তবে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি অপমানজনক কাজ, যেমন ছবি পোড়ানো, শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে, এই ঘটনায় এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। পুলিশ প্রশাসন এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে কিনা, সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এই ঘটনাকে তাদের দলের প্রতি আক্রমণ হিসেবে দেখছেন এবং এসএফআই-এর এই কাজকে “অগণতান্ত্রিক” বলে সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে সিপিআই(এম), এখনও এই বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করতে পারে।
কলেজ স্ট্রিটে (Kunal Ghosh) ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস দীর্ঘ। এই এলাকায় বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা, সামাজিক ন্যায়, এবং রাজনৈতিক বিষয়ে প্রতিবাদ হয়েছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পোড়ানোর মতো ঘটনা সাধারণত বিরল এবং এটি জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে, এবং তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অনেকে এসএফআই-এর এই কাজের সমালোচনা করলেও, কেউ কেউ মনে করছেন, এটি ছাত্রদের প্রতিবাদের একটি রূপ। তবে, কুনাল ঘোষের অভিযোগ, যেখানে তিনি এসএফআই-কে ঐতিহাসিক সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত করেছেন, তা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে এবং এটি বর্তমান ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
কলেজ স্ট্রিটে (Kunal Ghosh) মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পোড়ানোর ঘটনা এবং তা নিয়ে কুনাল ঘোষের আইনি ব্যবস্থার দাবি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা কেবল একটি প্রতিবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পুরনো ক্ষতকে উসকে দিয়েছে। তবে, ভিডিওর সত্যতা এবং অভিযুক্তদের দায় নির্ধারণের জন্য পুলিশ তদন্তের প্রয়োজন। আগামী দিনে এই ঘটনা কীভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করে, তা লক্ষ্য করার বিষয়।