বড়দিনের ‘বহিরাগত’ আশঙ্কা! পার্ক স্ট্রিটের নিরাপত্তায় কড়া লালবাজার

বড়দিনের (Christmas) ‘বহিরাগত’ আশঙ্কা! পার্ক স্ট্রিটের (Park Street) নিরাপত্তায় (Security) কড়া লালবাজার (Lalbazar)। কলকাতার পুলিশ (Police) এবং প্রশাসন এবার বড়দিন (Christmas) এবং বর্ষবরণের উৎসব নির্বিঘ্নে…

Christmas Security Park Street

বড়দিনের (Christmas) ‘বহিরাগত’ আশঙ্কা! পার্ক স্ট্রিটের (Park Street) নিরাপত্তায় (Security) কড়া লালবাজার (Lalbazar)। কলকাতার পুলিশ (Police) এবং প্রশাসন এবার বড়দিন (Christmas) এবং বর্ষবরণের উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে কলকাতার নিরাপত্তা (Kolkata Safety) ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনও ঘাটতি রাখা হবে না, বিশেষ করে পার্ক স্ট্রিট, যেখানে প্রতি বছর বিপুল জমায়েত হয় এবং সারা রাত ধরে উৎসব চলে।

এবারের বড়দিন (Christmas) এবং বর্ষবরণের উৎসব কিছুটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে, পুলিশ সন্দেহ করছে যে চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারী কেউ কলকাতায় প্রবেশ করতে পারে। বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং অস্থিরতা বাড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে চোরাপথে ভারতে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা বেড়েছে। এই আশঙ্কা থেকেই কলকাতা পুলিশ এবছর বড়দিন ও বর্ষবরণের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

   

তবে, শুধুমাত্র সীমান্তের পরিস্থিতি নয়, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্কের শক্তিশালীকরণও কলকাতার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভিসার নিয়ম শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা চোরাপথে ভারতে প্রবেশের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি কলকাতার পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগকে বিশেষভাবে সতর্ক করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে, এবং একে আরও শক্তিশালী করার জন্য একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

কলকাতার পুলিশ কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। বিশেষভাবে পার্ক স্ট্রিট এবং আশপাশের এলাকায় যেখানে বিপুল সংখ্যক লোক জমায়েত হয়, সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই পুলিশ বিভিন্ন হোটেল এবং গেস্টহাউসগুলিতে অতিরিক্ত নজরদারি চালাচ্ছে। পুলিশ কর্তারা জানাচ্ছেন, পার্ক স্ট্রিটের (Park Street) আশপাশে এবং শহরের প্রবেশপথগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে, যাতে কোনও রকম অনুপ্রবেশকারী ঢুকতে না পারে।

একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো, পুলিশ ইতিমধ্যেই পার্ক স্ট্রিট (Park Street) এবং সংলগ্ন হোটেলগুলিতে যেসব আবাসিক এক সপ্তাহের জন্য রুম বুক করেছেন, সেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে। তারা নির্দিষ্ট হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে, কীভাবে বুকিং হচ্ছে, কোন এলাকার লোকজন আসছেন এবং তাদের পরিচয়। এছাড়া, হোটেলগুলির অনলাইন বুকিং সিস্টেমও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই তথ্য খতিয়ে দেখার জন্য থানার একটি নির্দিষ্ট আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শুধু হোটেল এবং আবাসিকদের উপর নজরদারি নয়, পুলিশ এখন পার্ক স্ট্রিটের আশপাশের রাস্তা এবং সড়কগুলিতেও চেকপোস্ট স্থাপন করবে। যাতে কোনো সন্দেহজনক ব্যক্তিকে সন্দেহের ভিত্তিতে আটক করা যায়। কলকাতার পুলিশ জানায়, বড়দিন এবং বর্ষবরণের সময়ে শহরের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা একযোগে কাজ করবে। বিশেষত, পার্ক স্ট্রিটের (Park Street) মতো জনবহুল এলাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতির কারণে, এখানে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, কোনো রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাদের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পূর্ণ।

কলকাতার জনগণকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। উৎসবের সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা শহরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই পুলিশ কর্তৃপক্ষ সকলকে সতর্ক থাকার জন্য এবং সন্দেহজনক কোনো কর্মকাণ্ড দেখলে তৎক্ষণাৎ পুলিশকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্য প্ল্যাটফর্মে যাতে কোনো ধরনের গুজব বা ভুয়া খবর ছড়ানো না হয়, সে বিষয়ে পুলিশ বিশেষভাবে নজর রাখছে।

এছাড়া, পুলিশ জানিয়েছে যে বড়দিন ও বর্ষবরণের সময় মানুষের শান্তিপূর্ণ আনন্দে কোনও ধরনের বাধা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য তারা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে নিয়মিত টহল দেবে। পার্ক স্ট্রিট (Park Street) সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ একত্রে কাজ করবে। এভাবে, কলকাতার পুলিশ কর্তৃপক্ষ মনে করে যে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এদিকে, কলকাতার পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা ইতিমধ্যেই পার্ক স্ট্রিট (Park Street) ও আশপাশের এলাকায় সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে এবং কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এই সমস্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে, তারা আশা করছে যে, বড়দিন ও বর্ষবরণের উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে এবং শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

এছাড়া, কলকাতার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে এবং হোটেলগুলিতেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। শহরের শান্তি বজায় রাখতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।” এভাবেই, কলকাতার পুলিশ এবছর বড়দিন (Christmas) এবং বর্ষবরণের সময়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না এবং কঠোরভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।