কলকাতা: কলকাতার দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) শুরু হতে চলেছে এক নতুন অধ্যায়। শহরতলির অন্যতম জনপ্রিয় পুজো দমদম পার্ক ভারত চক্র এবার তাদের ২৫তম বর্ষ উদ্যাপন করছে রজত জয়ন্তী হিসেবে। আর এই স্মরণীয় বছরে পুজোর আয়োজনে থাকছে একাধিক চমক। আট হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে বিশাল ও বৈচিত্র্যময় মণ্ডপ। তবে এবারের মূল আকর্ষণ ‘প্রি-এগজ়িবিট মণ্ডপ পরিদর্শন’— এক অভিনব উদ্যোগ যা কলকাতার পুজো সংস্কৃতিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলেই মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
সাধারণত দুর্গাপুজোর (Durga Puja) মণ্ডপ দর্শন শুরু হয় উদ্বোধনের দিন থেকেই। কিন্তু তীব্র ভিড়, ট্রাফিক, এবং সময়ের অভাবে অনেক দর্শনার্থীর পক্ষে তা সম্ভব হয় না। বিশেষত, যাঁরা ভিড় এড়িয়ে প্রতিমা ও মণ্ডপ শান্তভাবে দেখতে চান— তাঁদের জন্য এবার ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টা থেকে রাত ৩টে পর্যন্ত থাকবে বিশেষ মণ্ডপ পরিদর্শনের সুযোগ। তবে এর জন্য অনলাইন টিকিট কাটতে হবে।
কোথা থেকে পাওয়া যাবে টিকিট?
দমদম পার্ক ভারত চক্র জানিয়েছে, district.in পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইন বুকিং করা যাবে।
সিঙ্গল টিকিট: ₹১০০
কাপল টিকিট: ₹১৫০
ফ্যামিলি টিকিট (৪ জন): ₹৩০০
প্রতিটি টিকিট শুধুমাত্র একবার প্রবেশের জন্য বৈধ।
পুজো কমিটির পক্ষ থেকে প্রতীক চৌধুরী জানান, “আমাদের মণ্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ২৩ সেপ্টেম্বর। তার আগেই পাঁচ দিন ধরে দর্শনার্থীরা মণ্ডপ ও প্রতিমা পরিদর্শন করতে পারবেন। এর ফলে যারা শান্ত পরিবেশে মণ্ডপ দর্শন করতে চান, তাঁদের জন্য বাড়তি সুযোগ তৈরি হল।”
যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রি-এগজ়িবিট পর্যায়ে প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হবে। এরপর উদ্বোধনের পরে মণ্ডপে সবার অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে।”
ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, “এটা একেবারে নতুন মাত্রা। আগে কিছু ট্যুর অপারেটর কোনও কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে আলাদা দিন ঠিক করে থাকলেও, কমিটির তরফ থেকে এমন প্রি-এগজ়িবিট দর্শনের পরিকল্পনা এই প্রথম। অন্য পুজো কমিটিগুলিও ভবিষ্যতে এই পথ অনুসরণ করতে পারে।”
কেন এই উদ্যোগ?
উদ্যোক্তাদের মতে, শহরের বহু মানুষ এবং বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীরা দুর্গাপুজো দেখতে চান, কিন্তু ভিড় তাঁদের বড় সমস্যা। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এমন উদ্যোগ। এটি যেমন আয়োজকদের আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে, তেমনি দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতাও আরও ভালো হবে।
দমদম পার্ক ভারত চক্রের এই প্রি-এগজ়িবিট ব্যবস্থা দুর্গাপুজোর প্রচলিত ধারা থেকে এক সাহসী এবং অভিনব পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ কলকাতার পুজো সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার পথে নতুন উদাহরণ তৈরি করতে পারে। আর শহরের পুজোপ্রেমী মানুষের কাছে এটা নিঃসন্দেহে এক বিশেষ সুযোগ।