আরজি কর হাসপাতালে নারকীয় ঘটনার পরপরই ধর্ষণ নিয়ে কড়া আইন আনা এবং দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা সেই চিঠির জবাব দিল কেন্দ্র। জবাবি চিঠিতে পাল্টা রাজ্য সরকারকেই দুষেছেন মোদীর মন্ত্রী। বলা হয়েছে, নারী নির্যাতন রোখার জন্য দেশে উপযুক্ত কড়া আইন থাকলেও তা কার্যকরের বিষয়টি রাজ্যের হাতে।
মোদী সরকারের তরপে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ৪৮ হাজারেরও বেশি ধর্ষণ এবং পকসো মামলা ঝুলে রয়েছে। তার পরেও কেন্দ্র অনুমোদিত ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সেই ধর্ষণ এবং পকসো মামলার শুনানি চালু করার জন্য কোনও সক্রিয় পদক্ষেপও করেনি রাজ্য সরকার। এমনকী কেন্দ্রের তরফে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও মহিলা এবং শিশুদের জন্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করেনি রাজ্য বলেও অভিযোগ।
গত ২২ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে ধর্ষণ নিয়ে কড়া আইন আনার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। সেই চিঠির জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী এবং শিশু কল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী।
নবান্ন অভিযানে ‘সক্রিয়’ শুভেন্দু, অথচ সুকান্ত ‘নিষ্ক্রিয়’ কেন? প্রশ্ন দিল্লির
গত২৫ অগস্ট লেখা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর চিঠিতে জানানো হয়েছে, দেশে মহিলা নির্যাতনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ, দ্রুত বিচারের জন্য প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই প্রকল্প কার্যকর করেনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করেছেন যে, ধর্ষণ এবং পকসো মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে কেন্দ্র ২০১৯ সালের অক্টোবরে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট প্রকল্প চালু করেছিল। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৩০টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৭৫২টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট কার্যকর। তার মধ্যে ৪০৯টি কোর্টে শুধুই পকসো মামলার বিচার হয়।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১২৩টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট অনুমোদন করা হয়েছিল প্রথমে। যার মধ্যে আবার ২০টি শুধুমাত্র পকসো মামলার দ্রুত বিচারের জন্য রাখা হয়েছিল। বাকি কোর্টগুলিতেও ধর্ষণের পাশাপাশি পকসো মামলার বিচার হওয়ার কথা। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ২০২৩ সালের জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে একটি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টও চালু করা হয়নি। ২০২৩ সালের ৮ জুন কেন্দ্রকে চিঠি লিখে রাজ্য জানিয়েছিল, তারা এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতে চায়। সেই সময় ৭টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট চালু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল রাজ্য। সেই মতো লক্ষ্যমাত্রা পুনর্বিবেচনা করে কেন্দ্র। রাজ্যের জন্য ১৭টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট অনুমোদিত হয়।
২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৬ পকসো ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট কার্যকর করা হয়েছে এ রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৬০০টি ধর্ষণ এবং পকসো মামলার বিচার ঝুলে রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও অনুমোদন দেওয়া বাকি ১১টি কোর্ট চালু করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে সেই দাবিই করা হয়েছে।