সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে ভয়াবহ ডাকাতি, একাকী বৃদ্ধার ঘর থেকে লুট নগদ ও গয়না

খাস কলকাতায়(Central Avenue)একাকী বৃদ্ধার বাড়িতে ডাকাতি। ঘটনায় শিউরে ওঠার মতো চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ৬৮ বছরের মধুমিতা মিত্র নামক এক বৃদ্ধা, যিনি তার তিনতলা বাড়িতে…

Central Avenue Major Robbery, Cash and Jewelry Looted from Elderly Woman's Home

খাস কলকাতায়(Central Avenue)একাকী বৃদ্ধার বাড়িতে ডাকাতি। ঘটনায় শিউরে ওঠার মতো চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ৬৮ বছরের মধুমিতা মিত্র নামক এক বৃদ্ধা, যিনি তার তিনতলা বাড়িতে একাই থাকতেন, সেদিন রাতে ডাকাতির শিকার হন। এ ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

মধুমিতা মিত্র বর্তমানে শয্যাশায়ী অবস্থায় বাড়িতে একা থাকতেন। তার মেয়ে বেঙ্গালুরুতে থাকেন এবং কয়েকদিন আগে বিমানবন্দরে তাকে ছাড়তে গিয়ে বৃদ্ধার পা ফেটে যায়, ফলে তার ফিমার হাড় ভেঙে যায়। এরপর থেকেই তিনি বাড়িতে শয্যাশায়ী ছিলেন এবং তার দেখভালের জন্য ছিলেন পরিচারিকা ও কেয়ারটেকার।

   

ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাতে। রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে কেয়ারটেকার বাড়ির কলিং বেল বাজান। এরপর তিনতলা থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে গেট খুলে দেন বৃদ্ধার পরিচারিকা। তারপর কেয়ারটেকার জল ভর্তি করতে ভিতরে প্রবেশ করেন। এই সময়েই এক দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে। দুষ্কৃতী প্রৌঢ়াকে ভয় দেখিয়ে লুঠপাঠ চালায় এবং ১৫ হাজার টাকার নগদ টাকা ও মূল্যবান গয়না নিয়ে চম্পট দেয়।

এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বড়তলার থানার পুলিশ। তবে, পুলিশের কাছে ওঠা প্রশ্ন হচ্ছে, দুষ্কৃতী কীভাবে জানল গেট খোলার সময়? কেন গেট খোলার পর সেটি আবার বন্ধ করা হয়নি? পুলিশ জানতে চাইছে, কি কারণে কেয়ারটেকার এবং পরিচারিকা একযোগে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে? এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনার পর এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। কীভাবে দুষ্কৃতী বাড়িতে প্রবেশ করল এবং তার উদ্দেশ্য কি ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। একদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে, অন্যদিকে এই ঘটনার ফলে এলাকায় প্রবীণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

বৃদ্ধার পরিচারিকা, যিনি ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশকে জানান, “আমি নীচে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কেয়ারটেকার আমাকে বলে জল খাবো, তারপর আমি গেট খুলে দিই। আর কিছু জানি না।” যদিও এটি সহজভাবে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না, কারণ একজন অপরিচিত ব্যক্তি জানলো কবে গেট খুলবে, এবং কীভাবে তার আগমনের সুযোগ পেয়ে ডাকাতি করল।

এই ঘটনায় এলাকায় মানুষ ভীত। প্রবীণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে কীভাবে তারা নিরাপদ থাকতে পারেন, তা নিয়ে গুরুতর আলোচনা চলছে।

এই ঘটনার পর পুলিশ একাধিক দিক থেকে তদন্ত করছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিচারিকা ও কেয়ারটেকারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই ধরনের অপরাধের ফলে তারা খুবই উদ্বিগ্ন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করতে হবে।

এ ঘটনার পর, কলকাতার প্রভাবশালী অঞ্চলে একাকী বৃদ্ধদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, ঘটনার তদন্তের পর যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত কোনও সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা না হলেও, তদন্তকারী সংস্থাগুলি সম্ভাব্য প্রমাণ এবং সাক্ষ্য সংগ্রহ করছে।