কলকাতা: আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদহ আদালত। বিচারক অনির্বাণ দাস রায় ঘোষণা করে জানান, সাক্ষ্য প্রমাণ এবং আদালতে পেশ করা সিবিআই-এর নথি-তথ্যের ভিত্তিতে আদালত সঞ্জয়কেই অপরাধী বলে মনে করছে। সিবিআই তাদের চার্জশিটে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে মোট ১১ দফা প্রমাণ পেশ করেছে। সাক্ষীদের বয়ান, ভিডিয়ো এবং ফরেন্সিক বা সায়েন্টিফিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই সব প্রমাণ তুলে ধার হয়েছে
এই ১১ দফা প্রমাণ হল—
১. সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই জানা গিয়েছে, গত ৯ অগাস্ট ভোরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার রুমে ঢুকেছিলেন সঞ্জয়। এটাই ছিল মূল ক্রাইম স্পট।
২. সঞ্জয় ওই রাতে আরজি কর হাসপাতালেই ছিলেন, তাঁর মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্রেস করে সেই প্রমাণ মিলেছে।
৩. ময়নাতদন্তে নির্যাতিতার দেহ থেকে সঞ্জয়ের ডিএনএ পাওয়া গিয়েছে৷
৪. সঞ্জয়ের যে প্যান্ট এবং জুতো পুলিশ উদ্ধার করেছিল, তাতে মৃতার রক্তের দাগ স্পষ্ট৷
৫. ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার ছোট ছোট চুলের সঙ্গে সঞ্জয়ের চুল মিলে গিয়েছে৷
৬. ঘটনার পরদিনই সেমিনার হল থেকে যে ব্লুটুথ ইয়ারফোন উদ্ধার হয়েছিল, তা সঞ্জয়ের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা ফোনের সঙ্গেই যুক্ত ছিল। উল্লেখ্য, ঘটনার রাতে সিসি ক্যামেরায় সঞ্জয়কে যখন ঘটনাস্থলের দিকে যেতে দেখা গিয়েছিল, তখন তাঁর গলায় এই ব্লুটুথ ইয়ারফোন জড়ানো ছিল। কিন্তু ওই ঘর থেকে বেরনোর সময় ওই ব্লুটুথ ইয়ারফোন তাঁর গলায় ছিল না।
৭. সঞ্জয়ের শরীরে যে ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছে, তা ৮ অগাস্ট থেকে ৯ অগস্টের মধ্যেই তৈরি হয়েছিল৷ ওই দিনই তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটেছিল।
৮. সঞ্জয়ের শরীরে তৈরি ক্ষতচিহ্ন নির্যাতিতার প্রতিরোধের ফলেই তৈরি হয়েছিল।
৯. সঞ্জয়ের মেডিক্যাল পরীক্ষা করে এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি যে, তিনি সঙ্গমে অক্ষম।
১০. সিএফএসএল কলকাতার রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার মৃতার অন্তর্বাস যে ভাবে ছিড়ে গিয়েছি, তাতে স্পষ্ট যে জোরজবরদস্তি তা খোলা হয়েছিল।
১১. এছাড়াও ওই তরুণী চিকিৎসক যে কুর্তি পরেছিলেন, তা কোমরের কাছ থেকে দু’পাশে ছিঁড়ে গিয়েছিল। যা টানাহেঁচড়ার কারণেই হয়েছে।
যদিও শনিবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও দোষ কবুল করতে চাননি সঞ্জয়৷ তাঁর দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে৷