ওবিসি নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই তালিকার উপর জারি অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অগস্ট মাস পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৫ অগস্ট।
এর আগে আদালতের নির্দেশে ২০১০ সালের পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেসব ওবিসি শংসাপত্র প্রদান করেছিল, তা বাতিল করা হয়। আদালত জানায়, নতুন ওবিসি তালিকা তৈরির আগে জনজাতিগত, সামাজিক, আর্থিক ও পেশাগত দিক থেকে বিশদ সমীক্ষা করা আবশ্যক। কিন্তু মামলাকারীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার যে সমীক্ষার ভিত্তিতে ওবিসি তালিকা তৈরি করেছে, তা জেলাভিত্তিক কিছু নির্দিষ্ট পরিবারকে ঘিরে সীমাবদ্ধ ছিল এবং পুরনো ও বর্তমান তালিকার মধ্যে সামান্যই পার্থক্য রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের আগে রাজ্যে ওবিসি তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল ৬৬টি— যার মধ্যে ৫৪টি ছিল অমুসলিম ও ১২টি মুসলিম সম্প্রদায়। ২০১০ সালের পর বামফ্রন্ট সরকার আরও ৪২টি (৪১টি মুসলিম ও ১টি অমুসলিম) এবং ২০১২ সালে তৃণমূল সরকার ৩৫টি (৩৪টি মুসলিম ও ১টি অমুসলিম) সম্প্রদায়কে ওবিসি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বাম এবং তৃণমূল সরকারের আমলে যে ৭৭টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি-র তালিকায় ঢোকানো হয়, শুধুমাত্র তাদের বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত যে ৬৬টি জনগোষ্ঠী অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অংশ ছিল তাদের শংসাপত্র গ্রাহ্য হবে চাকরির নিয়োগ কিংবা কলেজে ভর্তিতে।
রাজ্য সরকার আদালতে দাবি করেছিল, হাই কোর্টের এই স্থগিতাদেশের ফলে কলেজে ভর্তি ও সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে জানিয়ে দেয়, এমন কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, কারণ পূর্ববর্তী বৈধ তালিকাভুক্তরা এখনও সুবিধা পাচ্ছেন।
আদালতের নির্দেশের পর সমীক্ষার ভিত্তিতে রাজ্য সরকার নতুন করে ১৪০টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা প্রকাশ করেছিল। তারা জানায়, এই তালিকা সম্পূর্ণ আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে তৈরি, ধর্মের ভিত্তিতে নয়। কিন্তু এই নতুন তালিকাও আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং সেই সংক্রান্ত মামলাতেই বর্তমানে অন্তর্বর্তীন স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে।