কলকাতা: উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটা গ্রামে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনার পর কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করা হয়েছে। আদালত এই PIL দায়েরের অনুমতি দিয়েছে। মামলার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ-এর মাধ্যমে ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি করা হয়েছে।
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, রাজ্য পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে না। তাই কেন্দ্রীয় তদন্ত অপরিহার্য। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এনডিটিভিকে বলেন, “রাজ্য সরকার নিজেরই তদন্ত পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”
ঘটনা ঘটেছিল গত সোমবার নাগরাকাটার বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায়। খগেন মুর্মু, শঙ্কর ঘোষ এবং তাদের সঙ্গে থাকা অন্যান্য বিজেপি নেতারা বন্যার্তদের ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছিলেন। অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুঁড়ে এবং মুর্মুর মাথায় গুরুতর আঘাত করে।
মুর্মু বলেন, “তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছিল তারা ‘দিদির লোক’। তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়, মারধর করে, গাড়িতে পাথর ছুড়ে।” চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই আঘাত সারতে অন্তত দুই মাস লাগবে।
এই হামলার পর রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজেপি নেতারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র সমালোচনা করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই ঘটনার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। যারা বন্যার্তদের সাহায্য করতে গিয়েছিলেন, তাদের উপর হামলা হলো, যা নিন্দনীয়।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বক্তব্য দেন, “প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ করা ঠিক নয়। গণতান্ত্রিক দেশে আইনই দোষীদের চিহ্নিত করবে।” তিনি জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত যদি কেন্দ্রীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়, তবে তা রাজ্য রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।