হাইকোর্টের অনুমতি পেয়েই রবীন্দ্রনগর পরিদর্শনে শুভেন্দু

মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহেশতলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর এলাকায় (suvendu) অবস্থিত একটি শিব মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী…

suvendu visits in rabindranagar

মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহেশতলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর এলাকায় (suvendu) অবস্থিত একটি শিব মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়েছেন। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছে।

ঘটনার পটভূমি

গত ১১ জুন, ২০২৫-এ মহেশতলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত শিব মন্দিরে দুষ্কৃতীদের দ্বারা ভাঙচুর চালানো হয়। এই ঘটনায় মন্দিরের পবিত্র তুলসীমঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়, যা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

   

এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি রাজ্য (suvendu) বিধানসভায় ইস্যুটি উত্থাপন করার চেষ্টা করে, কিন্তু অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করে এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজভবনে যান।

শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) এই ঘটনার তদন্তের জন্য মহেশতলা পরিদর্শনের অনুমতি চেয়ে ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন। তবে, প্রাথমিকভাবে পুলিশ তাঁকে এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। এরপর তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান, এবং আদালত তাঁকে কিছু শর্তসাপেক্ষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অনুমতি দেয়। হাইকোর্টের বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছিলেন, “বিরোধী দলনেতাকে যদি আটকে দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে?”

শুভেন্দু অধিকারীর পরিদর্শন (suvendu)

কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর, শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) মেটিয়াবুরুজের রবীন্দ্রনগর এলাকায় শিব মন্দির পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। পরিদর্শনের সময় তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা রাজ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের একটি উদাহরণ এবং রাজ্য সরকারের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রমাণ।

তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা রাজ্যে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করছে, যা রাজ্যের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করছে।”

শুভেন্দু আরও (suvendu) অভিযোগ করেন যে, পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি দাবি করেন, “পুলিশের সমন্বয়ের অভাবिन्दা এই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনও অপরাধীদের ধরা পড়েনি।” তিনি স্থানীয়দের আশ্বাস দিয়েছেন যে, বিজেপি এই বিষয়ে সরকারের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করবে এবং অপরাধীদের শাস্তির জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার বিষয়ে বিজেপির সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) শুধুমাত্র ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন।” তৃণমূল দাবি করেছে যে, রাজ্য সরকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে, বিজেপি নেতারা এই ঘটনাকে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মহেশতলার ঘটনা রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রমাণ। তৃণমূল সরকার ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।”

সামাজিক প্রভাব ও জনমত

এই ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এক্স প্ল্যাটফর্মে অনেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “মন্দিরে ভাঙচুর ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর আঘাত। রাজ্য সরকারের উচিত এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া।” অন্য একজন লিখেছেন, “বিজেপি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। তৃণমূলের উচিত এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।”

Advertisements

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা শান্তি চাই। এই ধরনের ঘটনা আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। পুলিশের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”

আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ

পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করছে। ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” তবে, বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, পুলিশের তদন্তে ধীরগতি রয়েছে, এবং এটি রাজনৈতিক চাপের কারণে হচ্ছে।

কলকাতা হাইকোর্টের (suvendu) নির্দেশে শুভেন্দু অধিকারীকে কিছু শর্ত মেনে এলাকা পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে যেন তিনি নিরাপদে এলাকা পরিদর্শন করতে পারেন এবং পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ থাকে।

এই বহুমুখী বিদেশি মিডফিল্ডারকে বিদায় জানল পাঞ্জাব এফসি

শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান

শুভেন্দু অধিকারী, (suvendu) যিনি ২০২১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং নন্দীগ্রামের বিধায়ক, তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে আসছেন। তিনি সম্প্রতি রথযাত্রা উপলক্ষে হিন্দু ঐক্যের ডাক দিয়েছেন এবং রাজ্যে ধর্মীয় উৎসবগুলিকে শক্তিশালীভাবে পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মহেশতলার ঘটনায় তাঁর পরিদর্শন এবং প্রতিবাদ বিজেপির রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

মহেশতলার শিব মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনা এবং শুভেন্দু অধিকারীর পরিদর্শন রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে। বিজেপি এই ঘটনাকে সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে তুলে ধরছে, যখন তৃণমূল অভিযোগ করছে যে বিজেপি ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

কলকাতা হাইকোর্টের (suvendu) হস্তক্ষেপ এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিকে আরও জোরদার করেছে। আগামী দিনে এই ঘটনার তদন্ত এবং আইনি পদক্ষেপ রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।