বেশ অনেকদিন ধরেই পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহনের কাছে বাসের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে আসছিল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। কিন্তু পরিবহণ দফতর তাঁদের সেই আবেদন না মেনে ধাপে ধাপে একের পর এক বাস ওঠাতে শুরু করে। এবার বাসের (Private Bus) বয়সসীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে কলকাতা হাই কোর্ট পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিল, পরিবেশ বাঁচানোর জন্য কেএমডিএ-র আওতাভুক্ত এলাকায় ১৫ বছর বয়সসীমার ঊর্ধ্বে কোনও বাস আর চালানো যাবে না। বর্তমানে কলকাতা হাই কোর্টের সেই নির্দেশমতো পরিবহণ দফতর অগস্ট মাসের ১ তারিখ থেকে বাস বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
বেসরকারি বাস সংগঠনগুলির দাবি, ১ অগস্ট থেকে কয়েকটা নয়, প্রায় হাজার খানেক বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। যদিও সেই দাবি মানতে চাননি পরিবহণমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, “অগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মাত্র ১৫৭টি বেসরকারি বাস বাতিল হবে। তাই বেসরকারি বাসমালিকেরা যে দু’-আড়াই হাজার বাস বাতিলের কথা বলছেন, তা আদৌ সত্যি নয়।
গত পাঁচ বছরে বিকল্প পরিবহণ পরিষেবা দিতে শহরে কমপক্ষে এক হাজার গাড়ি নেমেছে। এছাড়াও প্রায় ৭০ হাজার অ্যাপ ক্যাবও রাস্তায় চলে। তাই সাধারণ যাত্রীদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।” যদিও পরিবহণমন্ত্রীর এই দাবি মানতে চাননি জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “পরিবেশ দফতর কেবল আদালতের নির্দেশের কথা উল্লেখ করছে।
আমরা যে দু’বছরের জন্য বাসের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা বলেছিলাম, সেই বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া উচিত ছিল পরিবহণ দফতরের। কিন্তু রাজ্য সরকার এই পদ্ধতিতে বাস মালিকদের পাশে না দাঁড়িয়ে বাস বাতিল করতে উদ্যত হয়েছে। আমরা নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করব, পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি পরিবহণ শিল্পের বর্তমান আর্থিক অবস্থার কথা বুঝে আদালত আমাদের দাবি বিবেচনা করবে।”
পরিবহণমন্ত্রী কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ১৫ বছরের পুরোনো গাড়ি বা বাস তোলা শুরু করতেই ‘গণ পরিবহণ বাঁচাও কমিটি’ নাম দিয়ে পরিবহণমন্ত্রীর পাশাপাশি পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনটি বাস সংগঠনের নেতারা। এবার বাসের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫-২০ বছর করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি হতে পারে।