আগামী বছরের কলকাতা বইমেলায় (Book Fair) বাংলাদেশ (Bangladesh) অংশগ্রহণ না করলেও, তাদের জন্য বরাদ্দ জায়গায় নতুন কোনও স্টলের অনুমোদন দেওয়া হবে না, এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন কলকাতা বইমেলার আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তাদের পক্ষে বইমেলায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হবে না। যদি কেন্দ্রীয় সরকার কোনও নির্দেশ না দেয়, তাহলে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো সম্ভব হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে, বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের (Bangladesh Pavilion) জন্য বরাদ্দ জায়গা ফাঁকা পড়ে থাকবে না। ওই জায়গায় কোনও প্রদর্শনী (exhibition) বা সভা আয়োজনের পরিকল্পনা (Plan) রয়েছে।’’
কলকাতা বইমেলায় (Book Fair) বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ইতিহাস অত্যন্ত দীর্ঘ। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বছর তারা কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়ে এসেছে, যা প্রতিবছর বইপ্রেমীদের কাছে এক উৎসবের মতো হয়ে ওঠে। বাংলাদেশি প্রকাশকদের বইয়ের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ বরাবরই উজ্জ্বল, এবং বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন প্রতি বছরই বড় আকারে নির্মিত হয়। তবে, এই বছরের বইমেলায় বাংলাদেশ অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তটির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নের জায়গায় কী ধরনের কার্যক্রম আয়োজন করা হবে।
ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘আগামী বছরের বইমেলায় (Book Fair) বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ জায়গায় নতুন কোনও স্টল দেওয়া হবে না। তবে, যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ তাদের অংশগ্রহণ পুনরায় শুরু করতে পারে। তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাহলে বাংলাদেশ আবার অংশগ্রহণ করতে পারে, সে সময় তাদের জন্য জায়গা বরাদ্দ করা হবে।’’’ তাঁর এই মন্তব্যটি বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এছাড়া, গিল্ডের সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে জানিয়েছেন, ‘‘গিল্ড সব সময় নতুন প্রকাশকদের সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এবছরও অনেক নতুন প্রকাশনা সংস্থা স্টল দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। তবে, তাদের আবেদন পর্যালোচনা করার জন্য একটি বিশেষ দল রয়েছে। তারা প্রকাশনার মান, বইয়ের বিষয়বস্তু এবং অন্যান্য উপাদানগুলো যাচাই করবে এবং তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
এখনো অনেক বইপ্রেমী ও প্রকাশক মনে করেন, বাংলাদেশ বইমেলায় (Book Fair) অংশগ্রহণ না করার ফলে তাদের জন্য একটি বিশাল শূন্যতা তৈরি হবে, কারণ বাংলাদেশি বই এবং প্রকাশকদের প্রতি কলকাতার পাঠক শ্রেণীর আগ্রহ প্রতিবারই চোখে পড়ার মতো। তবে, গিল্ডের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি উন্নত হলে বাংলাদেশ বইমেলায় ফিরে আসতে পারে এবং তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, গিল্ডের পক্ষ থেকে নতুন প্রকাশকদের জন্য বইমেলায় স্টল দেওয়ার নিয়মাবলি আরও স্বচ্ছ এবং কার্যকরী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, যাতে বইমেলায় (Book Fair) নতুন প্রকাশনা সংস্থাগুলি নিজেদের প্রকাশনা নিয়ে আরও দক্ষতার সঙ্গে দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে পারে।