প্রকাশ্য সভা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, অপেক্ষা করে থাকুন। আর আপনাদের ছাব্বিস ব্বিস(২০২৬) অবধি যেতে হবে না। চব্বিশে (২০২৪) বিসর্জন দিয়ে দেবো। সবে মহারাষ্ট্র। এর পর ঝাড়খণ্ড হবে। তারপর রাজস্থান হবে। তারপরেই বাংলায় পৌঁছে যাবো আমরা। এই সরকারকে রাখা যাবে না। শুক্রবার মমতার মুখে এনডিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি সমর্থনমূলক কথা শুনেই শুভেন্দুর সেই বক্তব্য ঘিরে ফের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে শিব সেনা সরকারের অন্দরে বিদ্রোহ ও সরকার পতনের পর কি ভয় পাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রে শিব সেনার বিদ্রোহীদের নিয়ে বিজেপি জোট ফের সরকার গড়েছে। আর শনিবার রথযাত্রার অনুষ্ঠান থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতার মন্তব্য, এনডিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর জেতার সম্ভাবনা বেশি। আগে জানালে ভেবে দেখতাম। মমতা অ-বিজেপি জোটের হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজ দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদে থাকা যশবন্ত সিনহাকে দাঁড় করিয়েছেন। বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেস, বাম যশবন্তকে সমর্থন করেছে। এখন মমতা নিজেই এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি আচমকা সহানুভূতিশীল।
নির্বাচন কমিশনের তরফে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই বিরোধী জোটের পক্ষে সবথেকে এগিয়ে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে জোট প্রার্থী লড়াই করছেন। আচমকা মমতা এনডিএ প্রার্থীকে মৌখিক সহানুভূতি জানিয়ে বিতর্ক তৈরি করে দিলেন। রাজনৈতিক মহলের আলোচনা মহারাষ্ট্রের সকার বদল সব অঙ্ক বদলে দিল। আর তাতেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের দড়ি ছেড়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
মমতার মন্তব্যে বিজেপি বিরোধী শিবিরেও অস্বস্তি বেড়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, অস্থিরমতি জননেত্রী, সবাই জানে দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে ভোটের সংখ্যা বেশি, নতুন আবিষ্কারের বিষয় নয়। এই পাল্টিবাজি আগেও করেছে। দিদি একবার এদিক ও দিক করেন। অতীত ইতিহাস দেখবেন প্রণব মুখার্জির ক্ষেত্রে। বিজেপির উপর থেকে হয়তো কোনও চাপ এসেছে, মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক তো ভাল।
সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান তো এসব ক্ষেত্রেই ঘোলাটে, অস্পষ্ট, দ্বিচারিতা। তাঁর দলের লোক যশবন্ত সিনহা। উনি যশবন্ত সিনহার সঙ্গেও রয়েছেন। আবার বিজেপি যদি চটে যায়, তাই বিজেপিতেও ইঁট পেতে রাখলেন।