বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যেই তাদের ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে। পিছিয়ে নেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও (BJP)। কারণ বঙ্গ বিজেপি তাদের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে জেলা সভাপতি নির্বাচনের কাজে গতি এনেছে। ইতিমধ্যে ২৫ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বাকি আছে আরও ১৮ জেলার সভাপতি নির্বাচন। নতুন সভাপতিদের নিয়ে জেলায় জেলায় চলছে জোর চর্চা। একই সঙ্গে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে সলতে পাকানোর কাজও চলছে পুরোদমে।
বিজেপি এখন বাকি জেলাগুলোর সভাপতি নির্বাচন দ্রুত শেষ করতে মরিয়া। সূত্রের খবর, এই লক্ষ্যে রবিবার সল্টলেকে দলের রাজ্য দফতরে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনশাল-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এছাড়াও বৈঠকে অংশ নেবেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদকরা। বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে বাকি জেলাগুলোর সভাপতি নির্বাচনের নাম চূড়ান্ত করা। তবে এই বৈঠকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বঙ্গ সফর নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হতে পারেন সেই নিয়েও এদিন আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ইতিমধ্যে রাজ্যের সাংগঠনিক জেলাগুলোর ৫০ শতাংশের বেশি সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ফলে রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের জন্য আর কোনও নিয়মগত বাধা নেই। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সভাপতি পদে কে আসবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। গত কয়েক মাস ধরে একাধিক হেভিওয়েট নেতার নাম নিয়ে চলছে আলোচনা। সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে রাজ্য বিজেপি গত কয়েক বছরে সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই শক্তিশালী হয়েছে বলে দাবি করছে দলের একাংশ। তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের ভিত আরও পোক্ত করতে নতুন মুখের উপর ভরসা রাখা হতে পারে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেখানেই উঠে এসেছে নতুন মুখ থেকে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সহ এক ঝাঁক নেতা-নেত্রীর নাম।
বিজেপি ছাড়াও অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করতে ব্যস্ত। তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস—সবাই তাদের জেলা স্তরের নেতৃত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক কাঠামো ঢেলে সাজানোর এই প্রক্রিয়া রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপির ক্ষেত্রে অমিত শাহের সম্ভাব্য সফর এবং নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচন দলের কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা আনতে পারে। তবে জেলা স্তরে কীভাবে নতুন সভাপতিরা কাজ করেন এবং দলের পুরনো-নতুন নেতাদের মধ্যে সমন্বয় কীভাবে হয়, সেটাই এখন দেখার। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সময়টা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।