২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে বিজেপি সদস্যতা অভিযানের মধ্য দিয়ে মাঠে নামল। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের ঘোষণা অনুযায়ী, এই অভিযানের লক্ষ্য রাজ্যের প্রতিটি বুথে ১০০ জন করে সদস্য তৈরি করা এবং পুরো রাজ্য জুড়ে সংগঠনের ভিত্তি আরও মজবুত করা। এই কর্মসূচির ঘোষণা বিজেপি জাতীয় সম্পাদক ঋতুরাজ সিংহা এবং পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা সুনীল বনশল দিয়েছেন।
বিজেপির এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে অন্যতম মূলমন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে “৭ টি T” – Tusk, Technology, Training, Time, Techniques, Target এবং Tolerance।
এই ৭ টি উপাদানের মাধ্যমে রাজ্যজুড়ে একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। প্রতি বুথে ১০০ জন সদস্য যুক্ত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট কৌশল এবং সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রতিটি স্তরের নেতা এবং কর্মীদের নিশ্চিতভাবে পালন করতে হবে।
পরিকল্পনার লক্ষ্য ও সদস্য সংখ্যা সংগ্রহ অভিযান
এবারে বিজেপি টার্গেট করেছে পশ্চিমবঙ্গের ৮০,০০০ বুথের মধ্যে ৬০,০০০ বুথে সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি গড়ে তোলা। সুনীল বনশল জানিয়েছেন, “বুথ এবং মণ্ডল ভিত্তিক সদস্য তৈরি না করলে লক্ষ্যমাত্রা সফল হবে না। প্রতি বুথে ১০০ জন সাধারণ সদস্য অবশ্যই থাকতে হবে।” দলের নির্দেশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মোর্চার সদস্যদের এই কর্মসূচির আওতায় এনে বুথ ভিত্তিক সক্রিয় সদস্য বানাতে হবে।
২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির এই সদস্যতা অভিযান আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এই সময়কালে প্রতিটি বুথে ক্যাম্প তৈরি করে জনসংযোগের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালিত হবে। এই কর্মসূচি শেষ হলে ১৬ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত একটি যাচাই পর্ব চলবে। এই সময়ের মধ্যে যাচাই করা হবে আদৌ টার্গেট পূরণ হয়েছে কি না এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সক্রিয় সদস্য তৈরির।
সক্রিয় সদস্য তৈরির কৌশল
বিজেপি দলের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ৬০,০০০ বুথে সদস্য সংখ্যা নির্ধারণের পর এবার কাজ হবে সক্রিয় সদস্য তৈরির। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, সদস্যদের মধ্যে থেকে প্রশিক্ষণ, সময়সীমা এবং দায়িত্ববোধের মাধ্যমে সক্রিয় সদস্য বানানোর কর্মসূচি চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। দলের নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ১০০ সদস্য সংগ্রহ হলেই সক্রিয় সদস্য অভিযান শুরু করতে হবে।
এই সদস্যদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ২০২৬ নির্বাচনে দলীয় কার্যকলাপে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হবে।
বিজেপির এই সদস্য সংগ্রহ অভিযান নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, এই কর্মসূচি বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে ‘প্রতিযোগিতামূলক প্রচারণা’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
এবারের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে বিজেপি দলকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে আরও দৃঢ় ভিত্তিতে দাঁড় করানোর যে চেষ্টা চলছে, তা কতটা সফল হবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে গোটা রাজ্য।