বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার ধর্মতলার সনাতনী সভা থেকে শুভেন্দু (Subhendu Adhikeri) একাধিক ইস্যুতে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্যের লক্ষ্য ছিল দুই দিক—বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা। তিনি বলেন, “যাহাই ইউনূস, তাহাই এপারে মমতা”। ধর্মতলার সনাতনী সভা থেকে হুঙ্কার শুভেন্দু অধিকারীর। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে ইউনূসকে কড়া আক্রমণ বিজেপি (BJP) নেতা শুভেন্দুর।
শুভেন্দু বলেন, “যতদিন চিন্ময় কৃষ্ণকে মুক্তি দেওয়া না হবে, আমাদের আন্দোলন চলবে।” তিনি বলেন, মমতা সরকার পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। শুভেন্দু দাবি করেন, সীমান্ত এলাকা থেকে যদি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের উৎখাত করা না হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গের সুরক্ষা চরম বিপন্ন হয়ে পড়বে।
শুভেন্দু বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিকটি তুলে ধরেও মমতা সরকারের প্রতি প্রশ্ন তোলেন। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে অবৈধ বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। শুভেন্দু বলেন, “ভারত থেকে বাংলাদেশে ৯৭টি জিনিস রপ্তানি হয়, এমনকি স্টিমারের যন্ত্রাংশ পর্যন্ত। যদি পেট্রাপোল বর্ডার বন্ধ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়বে।” এর মাধ্যমে শুভেন্দু স্পষ্ট করে দেন যে, সীমান্ত বাণিজ্যে ভারতের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশকে তার ওপর কতটা নির্ভর করতে হয়।
ধর্মতলার সভায় শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় আজ চরম সংকটের মুখে। শুভেন্দুর বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ভারতের অবদান অমূল্য হলেও, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার ভারতের প্রতি যে আচরণ করছে তা অকৃতজ্ঞতার পরিচয়। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭১ সালে ভারত ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনাকে মুক্তি দিয়েছিল এবং বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছেন অসংখ্য ভারতীয় সেনা। তবুও আজকের বাংলাদেশ ভারত বিরোধী অবস্থান নিচ্ছে, যা শুভেন্দুর মতে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
শুভেন্দু ইউনূস সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, “ভারত না থাকলে বাংলাদেশ তৈরি হতো না। বাংলাদেশ যত ভারত দখলের কথা ভাববে, আমরা তত অখণ্ড ভারতের ভাবনা চিন্তা করব।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের নীতি এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তাঁর দাবি, মমতা পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশে পরিণত করতে চাইছেন। সীমান্ত এলাকায় সুরক্ষা বেড়া স্থাপন করার অনুমতি না দেওয়ার জন্য তিনি মমতার সমালোচনা করেন। শুভেন্দুর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি মুসলমানদের অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী।
তিনি আরও বলেন, “কেন পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে না? কেন ধর্ম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আইন আনা হবে না? যদি ওয়াকফ বোর্ড থাকতে পারে, তবে সনাতনী বোর্ড থাকবে না কেন?” শুভেন্দুর এই বক্তব্য সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করার প্রচেষ্টা।
শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবতা দিবসে বসিরহাটের ঘোজাডাঙায় একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হবে। এই সভায় বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হবে। বিজেপি এবং একাধিক সংগঠন এই সভার আয়োজন করছে। তাদের দাবি, বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা দরকার।
ধর্মতলার সভায় শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য কেবল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিজেপির কৌশলকেও প্রতিফলিত করে। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে দুই দেশের সম্পর্কের জটিলতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশের ইস্যু।
Bangladesh: The situation in Bangladesh has sparked new tensions in West Bengal politics. At a Sanatani Sabha in Dharmatala on Thursday, BJP leader Subhendu Adhikari launched sharp attacks on two fronts: the persecution of minorities in Bangladesh and the role of West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee. Referring to the situation, Subhendu remarked, “What Yunus is there, Mamata is here.” He strongly criticized Yunus for alleged Hindu persecution in Bangladesh and accused Mamata Banerjee of enabling illegal activities across the border.