কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে প্রবল আলোড়ন। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এবার ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এল বিজেপির (BJP) ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি। এই কমিটির অন্যতম সদস্য হলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব।
বিজেপি (BJP) সূত্রের খবর, রবিবার সকালেই দিল্লি থেকে কলকাতায় পৌঁছেছেন এই কমিটির সদস্যরা। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের পাশাপাশি কমিটিতে রয়েছেন সাংসদ প্রফুল্ল প্যাটেল, দিলীপ ঘোষ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
কমিটির (BJP) মূল লক্ষ্য হল, দক্ষিণ কলকাতার ওই কলেজে ঠিক কীভাবে এই নৃশংস ঘটনা ঘটল, কীভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ল এবং রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা ঠিক কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন ছিল তা খতিয়ে দেখা।
বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব জানিয়েছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিম ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তারা স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চায়। এছাড়াও কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গেও কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে।
ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেছেন, ‘‘এই ধরনের পাশবিক ঘটনার কোনও রাজনৈতিক রং হতে পারে না। একজন ছাত্রীর সঙ্গে যে অপরাধ ঘটেছে, তার দ্রুত বিচার ও দোষীদের কঠোর শাস্তি প্রয়োজন। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।’’
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিজেপির (BJP) ভূমিকাকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি এই ঘটনার রাজনীতিকরণ করছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে।’’
তবে বিজেপি (BJP) নেতাদের দাবি, অভিযুক্তদের সঙ্গে শাসকদলের সম্পর্ক রয়েছে। তাঁরা এই ঘটনার পেছনে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ থাকার অভিযোগও তুলেছেন।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন কলকাতায় থেকে তদন্ত চালাবে তারা। রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে দল কী পদক্ষেপ নেবে, তা ঠিক করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এমন স্পর্শকাতর ইস্যুতে বিজেপির এই ধরনের পদক্ষেপ তৃণমূলের উপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশল। তবে সাধারণ মানুষের একাংশ মনে করছেন, রাজ্যের নারী নিরাপত্তা ইস্যুতে সব পক্ষেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া উচিত।
এই মুহূর্তে কসবাকাণ্ডে রাজ্যের রাজনৈতিক আবহ উত্তপ্ত। বিজেপির ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিমের রিপোর্ট প্রকাশের দিকে তাকিয়ে সকলে।