দিল্লিতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, বিজেপির রাজ্য টিম গঠনে শমীক ভট্টাচার্য

রাজ্যের রাজনীতি এখন সরগরম বিজেপির আসন্ন পরিকল্পনা ঘিরে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল ইতিমধ্যেই কৌশলগত প্রস্তুতি শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি…

BJP Bengal mp Samik Bhattacharya to Meet Central Leaders in Delhi on Sunday

রাজ্যের রাজনীতি এখন সরগরম বিজেপির আসন্ন পরিকল্পনা ঘিরে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল ইতিমধ্যেই কৌশলগত প্রস্তুতি শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য রবিবার দিল্লি রওনা দিচ্ছেন। সেখানে তাঁর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। এই বৈঠকগুলিই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে বঙ্গ বিজেপির রাজনৈতিক রূপরেখা। বিশেষত, নতুন রাজ্য কমিটি গঠন এবং নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করার বিষয়েই এই আলোচনা কেন্দ্রীভূত থাকবে।

রাজ্য কমিটি গঠনের চূড়ান্ত ধাপ

   

সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে শমীকের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক বসতে চলেছে। সেই বৈঠকেই স্থির হবে বিজেপির আগামী রাজ্য কমিটি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার দলের নেতৃত্বে কিছু মুখ বদল হতে পারে। নতুন প্রজন্মের নেতা–নেত্রীদের জায়গা দেওয়ার পাশাপাশি, সংগঠনকে মজবুত করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অভিজ্ঞ ও লড়াকু নেতাদেরও গুরুত্ব দিতে চাইছেন। ফলে, কারা থাকবেন শমীকের টিমে, তা নিয়ে দলীয় অন্দরে ইতিমধ্যেই ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে।

নির্বাচনী রণকৌশল

২০২১ সালের নির্বাচনে প্রত্যাশিত সাফল্য না পেলেও, বিজেপি এখনও বাংলার প্রধান বিরোধী শক্তি। তাই ২০২৬-এর ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে দল। জানা গিয়েছে, দিল্লির বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচনা হবে বুথস্তরে সংগঠন শক্তিশালী করার রূপরেখা নিয়ে। প্রতিটি বুথে সক্রিয় কর্মী গড়ে তোলা, বিরোধীদের ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরানো এবং তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন—এই বিষয়গুলিতেই মূলত জোর দিতে চান কেন্দ্রীয় নেতারা।

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার, জনসংযোগ বৃদ্ধি এবং ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের উপরেও বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হবে। কারণ বিজেপি মনে করছে, মানুষের ক্ষোভ ও অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে জনমত নিজেদের দিকে টানাই ২০২৬-এর নির্বাচনের মূল কৌশল হবে।

Advertisements

ভুয়ো ভোটার চিহ্নিতকরণে নতুন উদ্যোগ

একইসঙ্গে বৈঠকে আলোচনার অন্যতম বিষয় হচ্ছে ‘সার’ (State Automated Register) চালুর পর ভুয়ো ভোটার চিহ্নিতকরণ। জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকায় শুদ্ধিকরণ হবে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব চান, পশ্চিমবঙ্গেও এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করুক রাজ্য বিজেপি। শমীক ভট্টাচার্যকে দিল্লি বৈঠকে এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রাজ্যে বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে ভোটার তালিকায় বিপুল পরিমাণ ভুয়ো নাম রয়েছে। বিজেপির মতে, এই ভুয়ো ভোটারদের জন্যই একাধিক ক্ষেত্রে ভোটের ফলাফল প্রভাবিত হয়। তাই ভুয়ো ভোটার বাদ দেওয়ার লড়াইকে রাজনৈতিক ইস্যু করে তুলতে চাইছে বিজেপি।

সামনে কাঁটাতার

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধু কমিটি গঠন বা কৌশল তৈরি করাই যথেষ্ট নয়। বিজেপিকে মাটিতে নেমে লড়াই করতে হবে। গত কয়েক বছরে একাধিক সাংগঠনিক সমস্যা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ দলকে দুর্বল করেছে। সেই সব জট কাটিয়ে একজোট হয়ে লড়াই করাই হবে বিজেপির বড় চ্যালেঞ্জ।