বিধাননগরের দীর্ঘদিনের অবহেলিত ও ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোর মেরামত কাজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। মেরামত কাজ এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। সোমবার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নায়াপট্টি এলাকার কাছে একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। এটি ছিল একটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে, বাকি ১৩টি ওয়ার্ডে যেখানে মেরামত কাজ পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখানে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিধাননগর পৌরসভা (BMC)-এর এক কর্মকর্তা। বিধাননগরের বেশিরভাগ রাস্তাতেই বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে এবং ওপরের স্তরও ক্ষয়ে গেছে। রাস্তায় পাথরের কুচি পড়ে থাকায় সেগুলো হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। দুই বছর আগে কিছু নির্বাচিত অংশে মেরামত কাজ করা হয়েছিল, কিন্তু সেই রাস্তাগুলো আবারও ভেঙে পড়েছে বলে জানান বিধাননগর এলাকার বিধায়ক সুজিত বসু।
এবার, পৌরসভা ঠিকাদারদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে, তাতে কাজের গুণমান বাড়ানোর জন্য একটি শর্তও রাখা হয়েছে। সুজিত বসু বলেন, “রাস্তাগুলোর গুণমান এমনভাবে হওয়া উচিত, যাতে অন্তত পাঁচ বছর টেকে। যদি এই সময়ের মধ্যে রাস্তা আবার ভেঙে যায়, তবে ঠিকাদারদের নিজেদের খরচে মেরামত করতে হবে।” বিধাননগর পৌরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “এবার কাজের গুণমানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন টিকবে এমনভাবে কাজ হবে।”
সল্টলেকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই মেরামত কাজটি তাদের কাছে “অনেক দিনের প্রত্যাশিত” ছিল এবং তারা আশা করছেন, এবার কাজ দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিএইচ ব্লকের এক বাসিন্দা বলেন, “আজকাল এমন মেরামত আগে খুব একটা দেখিনি। আমি দেখলাম, এক্সকাভেটর দিয়ে পুরোনো স্তরগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।” সল্টলেকের ১৪টি ওয়ার্ডে প্রাথমিকভাবে মেরামত কাজ হবে। এই ১৪টি ওয়ার্ড— ২৮ থেকে ৪১ নম্বর পর্যন্ত— সকলেই সল্টলেকের এলাকার অন্তর্গত, যা সুজিত বসুর বিধানসভা এলাকার অংশ। বিধাননগর পৌরসভা ২৯.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে এই মেরামত কাজের জন্য। সুজিত বসু বলেছেন, “আমরা ঠিকাদারদের নির্দেশ দিয়েছি, কাজ যেন এক মাসের মধ্যে শেষ হয়। তারা বলেছেন, দশ দিন অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হতে পারে।”
এদিকে, কেএমডিএ (KMDA) প্রধান সড়কগুলোর মেরামত করবে, যেমন— করুণাময়ী ক্রসিং থেকে জেকে সাহা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা, আর বিধাননগর পৌরসভা ব্লকের ভিতরের রাস্তাগুলো মেরামত করবে। মোট ২২ কিলোমিটার রাস্তার মেরামত এই পর্যায়ে করা হবে, জানিয়েছে BMC-এর এক কর্মকর্তা। এতদিনে শুরু হওয়া এই মেরামত কাজের ফলে সল্টলেকবাসী অনেকটাই আশাবাদী, যদিও তারা চান, কাজের মান যেন দীর্ঘদিন টিকে থাকে এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।