সব দলের নজরে অবাঙালি ভোটারের পীঠ ‘মিনি ভারত’ ভবানীপুর

লোকসভা ভোটে নজরে ভবানীপুর বিধানসভা (Bhabanipur Assembly Constituency)। কলকাতা দক্ষিণের এই কেন্দ্রে নানা ভাষার ভোটারের বাস। গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে এখানকার একাধিক ওয়ার্ডে এগিয়ে…

Bhabanipur Assembly Constituency

লোকসভা ভোটে নজরে ভবানীপুর বিধানসভা (Bhabanipur Assembly Constituency)। কলকাতা দক্ষিণের এই কেন্দ্রে নানা ভাষার ভোটারের বাস। গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে এখানকার একাধিক ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এবার সবদলেরই নজর সেই সব ওয়ার্ডে। অবাঙালি ভোটারদের মন জয়ে জল মাপছে সব পক্ষই।

কলকাতা দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী বলছেন, ‘আমরা সবাইকে সম্মান করি। আমরা মনে করি, ভারতের যে কোনও প্রান্তের যে কোনও মানুষ ভারতীয়।’ তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের আবার অন্য তত্ত্ব। তিনি বলছেন, ‘২০০৪ সালে একটা সিট হলেও কিন্তু এই কলকাতা দক্ষিণ তৃণমূল পেয়েছিল। এটা তৃণমূলের গড়। কোনোবার কোনও প্রার্থী হরেনি।’ পিছিয়ে নেই বাম-কংগ্রেস জোট। সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম বলছেন, ‘আমি মনে করি, আমি এখানকার যোগ্য প্রার্থী। আমি চার ভাষায় কথা বলতে পারি। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দু।’

   

চলছে লোকসভা ভোট। এই ভোটেও চর্চায় একটা বিধানসভা আসন। কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের ভবানীপুর। এখানকার বেলতলা, যদুবাবুর বাজার সংলগ্ন আটটি ওয়ার্ডে অবাঙালির সংখ্যা বেশি। পঞ্জাবি-গুজরাটিসহ নানা ভাষাভাষী। এই জন্যই অনেকে বলেন, ভবানীপুর যেন মিনি ভারত। এখানকার অবাঙালি ভোটারদের মন জয়ে সব দলই কোমর বেঁধে ময়দানে।

সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিমের মতে, ‘কলকাতা দক্ষিণ অনেক কসমোপলিটন জায়গা। অনেক ধর্ম, অনেক ভাষা দেখতে পাচ্ছেন। হিন্ধি ভাষী, গুজরাতি, বাঙালি, এলিট সোসাইটি আছে। আমিও মিনি ইন্ডিয়ার অংশ। আমি সেনা পরিবারের সদস্য। আমার আউটলুক অনেকটা কসমোপলিটন। তাই, আমিই এখানকার যোগ্য প্রার্থী।’

কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে দীর্ঘদিন সাংসদ ছিলেম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের জন্ম ১৯৯৮ সালে। তখন থেকেই কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রটি তৃণমূলের। ২০১১ সাল থেকে ভবানীপুর বিধানসভাও ঘাসফুলের। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এখানকার অবাঙালি প্রধান ৬ ওয়ার্ডে এগিয়েছিল বিজেপি। এর মধ্যে দুটি ওয়ার্ডে একুশেও পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এরপর ২০২২ সালের উপনির্বাচনে জয়ী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন সব ওয়ার্ডেই ঘাসফুল।

এবার তো লোকসভা ভোট। প্রধানমন্ত্রী ঠিক হবেন। এবার কী হবে? তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় বলছেন, ‘লোকসভায় ভাবে এখানে বোধ হয় ভোট দিলে মোদি জিতে যাবে। কিন্তু সেটা তো নয়। ২০০৪ সালে একটা সিট হলেও কিন্তু তৃণমূল পেয়েছিল। এটা তৃণমূলের গড়। কোনোবার কোনও প্রার্থী হরেনি। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসকে ওরা আলাদা একটা চোখে দেখে। সেই ভরসাতেই তারা ভোট দেয়।’

পালটা সুর চড়িয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধূরী। তৃণমূলকে নিশানা করে তিনি বলেছেন, ‘এর আগেও উনি দেখেছেন লোকসভা নির্বাচনে। এবারেও উনি দেখবেন। ভবানীপুর ওনার সঙ্গে কী ব্যবহার করেন। আপনারাও জানেন, আমরাও জানি, কীভাবে জেতা যায়, কীভাবে জেতেন। কীভাবে হাইরাইজে তালা মারতে হয়। যদি সৎ সাহস থাকে, তাহলে ভয় না দেখিয়ে ভোট দিতে দিন। তারপরে দেখা যাবে।’