বাঙালি অস্মিতার ইস্যুতে বুধবার রাজপথে নামে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ভিন রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজ স্কোয়ার থেকে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। সেই মিছিলে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং-এ শেষ হয় এই মিছিল, যেখানে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।(Suvendu Adhikari)
কিন্তু এই আন্দোলনের মধ্যেই রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত করে তুললেন রাজ্যের(Suvendu Adhikari) বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শুভেন্দুর অভিযোগ, “বাঙালি অস্মিতার রাজনৈতিক ভাষ্য তৈরি করতে উদ্যত তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু কার স্বার্থে? বাংলাভাষী রোহিঙ্গা, না কি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মুসলিমদের স্বার্থে?”
তিনি আরও লেখেন, “দুর্নীতির কারণে শিক্ষকতার চাকরি হারিয়ে বাংলাভাষী যুবকরা আজ পথে। তাঁরা বাংলা ভাষায় আর্তনাদ করছেন, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কানে তা পৌঁছচ্ছে না। এ কেমন অস্মিতা? এ কেমন বাঙালির জন্য লড়াই?”
শুধু এখানেই থামেননি শুভেন্দু। তিনি প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ‘যোগ্য বাঙালি’ অফিসারদের উপেক্ষার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। শুভেন্দুর প্রশ্ন, “কেন অত্রি ভট্টাচার্য এবং সুব্রত গুপ্ত উপেক্ষিত হলেন? কেন তাঁদের থেকে জুনিয়র মনোজ পন্থকে মুখ্যসচিব করা হল? কেন পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে অভিজ্ঞ IPS অফিসার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে পাশ কাটিয়ে ভিনরাজ্য থেকে আসা জুনিয়র রাজীব কুমারকে DGP করা হল?” এই প্রশ্নগুলির মাধ্যমে বিরোধী দলনেতা দাবি করছেন, বাস্তবে বাঙালির মর্যাদা রক্ষা নয়, বরং তৃণমূল নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে এই ‘অস্মিতা’ ইস্যুকে ব্যবহার করছে।
শুভেন্দুর এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল। দলের সাংসদ দোলা সেন বলেন, “বিরোধী দলনেতার মাথার ঠিক নেই। ২০২১ ও ২০২৪ সালের ফল খুবই খারাপ হয়েছে। ২০২৬-এ ওঁদের আসন সংখ্যা ৪০-৫০-এ নেমে আসবে। তখন ওঁর চাকরিই থাকবে না। যার তার কেটে যায়, তার কথার জবাব দেওয়াটা সময়ের অপচয়। যত ওঁরা বলছেন, তত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও এগিয়ে যাচ্ছেন।”
দোলা সেনের মন্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, তৃণমূল এই আন্দোলনকে শুধুই আবেগ নয়, বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রশ্ন বলেই দেখাতে চাইছে। অন্যদিকে, বিজেপির মতে এটি নিছক রাজনৈতিক চমক। বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক ময়দানে সেই উত্তাপও তত বাড়ছে।(Suvendu Adhikari)
বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থা, বাংলাভাষীদের পরিচয় সংকট এবং প্রশাসনের মধ্যে বাঙালিদের উপেক্ষা—এই তিনটি কেন্দ্রবিন্দুতে এখন দাঁড়িয়ে বাঙালি অস্মিতার রাজনীতি। তৃণমূল এই আবেগকে ব্যবহার করে জনমতের সমর্থন আদায় করতে চাইছে, আর বিজেপি সেই কৌশলের ফাঁক খুঁজে তা ভণ্ডামি বলে তুলে ধরতে চাইছে।(Suvendu Adhikari)
এখন দেখার, তৃণমূলের এই প্রতিবাদ মিছিল কতটা জনসমর্থন পায় এবং শুভেন্দুর প্রশ্নবাণ তার ধার কতটা কমাতে পারে। তবে একথা বলাই যায়, বাঙালি পরিচয় ও ভাষা আজ ফের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে।(Suvendu Adhikari)