বেলঘরিয়া: বেলঘরিয়ার ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের ফেস্টে মাথায় মদের গ্লাস নিয়ে বেলি ড্যান্সারের সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) এক প্রাক্তন নেতার নাচ৷ তীব্র বিতর্ক রাজ্য রাজনীতিতে। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ‘জামাল কুদু’ গানের তালে এক যুবক এক মহিলার সঙ্গে কোমর দোলাচ্ছেন। সেই যুবক হলেন রানা বিশ্বাস, যিনি প্রায় দশ বছর আগে এই কলেজ থেকেই পাশ করেছেন৷ তাঁর মা বর্তমানে কামারহাটি পৌরসভার কাউন্সিলর ।
তীব্র কটাক্ষ সিপিএম ও বিজেপি’র
ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই সিপিএম ও বিজেপি তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূলকে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফের একবার রাজ্যের কলেজগুলোতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভূমিকা ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য ও কলেজের প্রাক্তন ছাত্রনেতা সায়নদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের সময়ে এমন সংস্কৃতি ছিল না। মাথায় মদের গ্লাস নিয়ে ছাত্রনেতাকে নাচতে হয়নি। ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজ একসময় বেলঘরিয়া-কামারহাটির গর্ব ছিল। এখন তার অপমান হচ্ছে। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক অভ্যস্ত চিত্র।”
সরব সিপিএম নেত্রী গার্গী Belghoria College Fest Controversy
একই সুরে সরব সিপিএম নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “এই ধরনের ঘটনা রাজ্যের প্রতিটি কলেজেই ঘটছে। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নেতারা এখন কলেজে পড়াশোনার বদলে ফুর্তি করতে আসেন। এই অপসংস্কৃতির পেছনে ছাত্র সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের প্রশ্রয় রয়েছে।”
বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “তৃণমূল রাজ্যের কলেজগুলিকে বারে পরিণত করেছে। সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রানা বিশ্বাস মাথায় মদের গ্লাস নিয়ে নাচছে, আর অন্যত্র ছাত্রনেতারা ছাত্রীদের দিয়ে মাথা টেপাচ্ছে। এই হল কলেজের বর্তমান চিত্র।”
রানা বিশ্বাসের পাশে তৃণমূল
তবে বিতর্কের মুখেও রানা বিশ্বাসের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। কামারহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান ও কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য গোপাল সাহা বলেন, “আমি ওই নাচ দেখেছি। তবে ওটা মদের গ্লাস কিনা বলতে পারব না। কলেজ ফেস্টে এই ধরনের অনুষ্ঠান হয়েই থাকে। এতে ভুল কিছু দেখি না। আপনার কাছে অশালীন মনে হলেও অনেকেই এই নাচ উপভোগ করেন।”
কলেজ কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। রানা বিশ্বাস নিজেও ভিডিও বা নাচ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে ধর্ষণের অভিযোগ, বিভিন্ন কলেজে TMCP নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা অনৈতিকতার অভিযোগের পর এবার ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের ঘটনাও রাজ্যে ছাত্ররাজনীতির বর্তমান চেহারা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে এই ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে রাজ্যজুড়ে আলোচনা চলছে।