আগামীকাল ৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় শিক্ষক দিবস (Bangla Pokkho)। ভারতবর্ষের আধুনিক দর্শনের পথপ্রদর্শক এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনেই আপামর ভারতবাসী শিক্ষক দিবস পালন করে। অন্তত এতদিন তাই সবাই পালন করে এসেছে। তবে এই বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে বাংলাপক্ষ। বাংলা এবং বাঙালির অধিকারের জন্য প্রতিবাদী সংগঠন বাংলাপক্ষ ৫ ই সেপ্টেম্বর কে শিক্ষক দিবস বলতে নারাজ।
ঠিক এমন ই একটি পোস্ট করেছেন বাংলাপক্ষের সাধারণ সম্পাদক এবং প্রতিষ্ঠাতা গর্গ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আগামীকালের শিক্ষক দিবসকে ‘রাষ্ট্রীয় জালিয়াতি দিবস’ বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তার পোস্টে। তিনি বলেছেন “সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন বাঙালি ছাত্র যদুনাথ সিংহের গবেষণা চুরি করে নিজের নামে চালিয়েছিলেন। তিনি চিটিংবাজ, জাতীয় শিক্ষক নন।
গর্গ কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলেছেন দিল্লি চোরকে শিক্ষক বলে, কিন্তু বাঙালি চোরকে চোর বলে।”গর্গ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের বিখ্যাত দুই খণ্ডের গ্রন্থ Indian Philosophy, যার জন্য তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছিলেন, তা আসলে তাঁর লেখা নয়। এই গ্রন্থের মূল লেখক ছিলেন বাঙালি গবেষক ড. যদুনাথ সিংহ।
তিনি বলেন, “১৯১৭ সালে যদুনাথ সিংহ এমএ পাস করার পর তাঁর গবেষণাপত্রের প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা করেছিলেন। সেখান থেকে সেই গবেষণা চুরি করেন রাধাকৃষ্ণন ১৯২৭ সালে লন্ডন থেকে নিজের নামে প্রকাশ করেন।” পরবর্তীকালে যদুনাথ সিংহ এই চুরির বিষয়টি জানতে পেরে ১৯২৯ সালের ২২ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ মামলার পর এটি ‘আউট অফ কোর্ট সেটেলমেন্ট’-এর মাধ্যমে মীমাংসা হয়। গর্গের অভিযোগ, এই মীমাংসার পেছনে প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছিলেন আরেক বাঙালি-বিরোধী ব্যক্তিত্ব শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। গর্গ আরও বলেন শিক্ষক দিবস হওয়া উচিত ২৬ সেপ্টেন্বর ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন।
তার কারণ ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং তার দেশের প্রতি অবদান সবসময়ই স্মরণ করতে হয়। বিধবা বিবাহ আইন থেকে শুরু করে দেশের নারী শিক্ষায় বিদ্যাসাগরের অগ্রণী ভূমিকা তাকে আজও মানুষের মনের মনিকোঠায় জায়গা দিয়েছে। তবে গর্গ র এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সমোলোচকরা বলেছেন গর্গ র কথায় যুক্তি থাকলেও শ্যামাপ্রসাদকে বাংলা এবং বাঙালি বিরোধী বলা উচিত হয়নি তার।
বন্যাত্রাণ বাবদ কেন্দ্রের কাছে ৫৭০২ কোটি টাকা চাইল উত্তরাখন্ড
আবার অনেকেই সরাসরি গর্গকে সমর্থন করে বলেছেন শিক্ষক এবং সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান রাধাকৃষ্ণনের থেকে অনেক বেশি। সুতরাং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনকেই জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে মান্যতা দিক কেন্দ্র। তাহলেই বাংলা এবং বাঙালির প্রতি দিল্লির শাসকদের কত সম্মান তা বোঝা যাবে।