Baishaki Banerjee Exclusive: বৈশাখীর মুখে শুধুই লাল-ঝাণ্ডার গুণগান! চটালেন না তৃণমূলকেও, ভোট নিয়ে অকপট শোভন-বান্ধবী

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা:  রাজনীতির ময়দান থেকে সন্ন্যাস নিয়েছেন বহুদিন। তবুও তিনি রাজনীতির আঙিনায় প্রবল ভাবে উপস্থিত। তাঁকে এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই টানাটানি করা…

baisakhai banerjee

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা:  রাজনীতির ময়দান থেকে সন্ন্যাস নিয়েছেন বহুদিন। তবুও তিনি রাজনীতির আঙিনায় প্রবল ভাবে উপস্থিত। তাঁকে এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই টানাটানি করা হয়। তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্ককে রাংতা মোড়া হেডিং করে রাস্তায় মোড়ে মোড়ে টাঙানো হয়। রাজনীতি হোক কিংবা ব্যক্তিগত প্রণয়, শোভন-বৈশাখী যেন বাঙালির প্রেমের নতুন উদ্দ্যম। তবুও বৈশাখী (Baishaki Banerjee) যেন সবকিছু হজম করে নিতে শিখেছেন। ভোটের মরশুমে চুপচাপ বসে বসে কি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের হিসেব কষছেন? নাকি ভোট ভুলে প্রেমেই ডুবে আছেন?

কিছুদিন আগে প্রবল গরমে কালবৈশাখী আসার খবরে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি মিম করে ছাড়া হচ্ছে! একবারও চোখে পড়েনি তাঁকে প্রতিবাদ করতে, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাঁটাছেড়া করা হয়েছে তবুও তিনি নিশ্চুপ। তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি হাসতে হাসতে বললেন, “জীবনের অনেক কিছুই আমি গোপনীয় রাখতে চেয়েছি। ছোট থেকেই এইভাবে বড় হয়েছি। কিন্তু একটা সময়ের পরে আমাকে যেন ক্যামেরা ছেঁকে ধরেছে। যেখানেই যাই পিছনে পিছনে ক্যামেরা ছোটে। একটা সময় অসহ্য লাগে। মনে হয় জীবনে ব্যক্তিগত বলে কিছু নেই।” একটু থেমে তিনি আবার বললেন, “এটা স্বাভাবিক মানুষের প্রতিক্রিয়া নয়। মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা করাটা ঠিক নয়।”

   

গলায় আপক্ষের সুর স্পষ্ট। তবুও তাঁকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই পাওয়া গেল। লোকসভা ভোটের মরশুমে তিনি স্পষ্ট জানালেন, “একজন সৎ মানুষের পক্ষে বেশীদিন রাজনীতিতে থাকা মুশকিল।” যদিও কথাটা শেষ করার পরে তিনি আরও জানালেন যে, “তবে আমি বলছি না যে এই মুহূর্তে রাজনীতিতে সৎ মানুষ নেই। নিশ্চই আছেন। তবে ধামাধরা লোকের সংখ্যাই বেশী। এই মুহূর্তে একজন মহিলা হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে থেকে সৎ থাকা বড্ড মুশকিল। বিভিন্ন দিক থেকে তাঁকে আঁকড়ে ফেলার প্রক্রিয়া চলতে থাকে।” 

তাঁকে প্রশ্ন করা হল, “এইবার লোকসভা ভোট কি নির্ণায়ক ভোট হতে চলেছে?” তিনি উত্তর দিলেন, “নির্ণায়ক কিনা জানি না, তবে প্রতিবারের মতো এইবারের ভোটের পরেও কিছু বদলাবে। ” তাঁকে ফের প্রশ্ন করা হল, “শিক্ষাবিদের মতে এইবার বিজেপি ক্ষমতায় এলে নাকি নারীর অধিকার খর্ব হবে?” তিনি জানালেন, “কী হবে সেটা এখনই জানি না। তবে বিজেপি দলটা পিতৃতান্ত্রিক। মহিলাদের সম্মান করতে জানে না। অন্তত আমি যেটুকু সময় বিজেপিতে কাটিয়ে এসেছি সেই সময়ের কথা বলতে পারব। অন্তত বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব কোনওদিন বাংলার মাটিকে গুরুত্ব দিল না। তাঁরা সেই হিন্দি বলয়ের ছাপ থেকে বেরোতে পারল না।”

তাঁকে থামিয়ে প্রশ্ন করা হল, “আবার কি বিজেপি ফিরে যাবেন নাকি তৃণমূলে ফিরবেন?” তিনি বললেন, “এই মুহূর্তে কিছু ভাবিনি। দলে যাওয়ার আগে অনেক কিছু ভাবতে হয়। সেই ভাবনা এখনও জন্মায়নি।” সন্দেশখালি ইস্যু কি এইবার তৃণমূলের ভোট ব্যাংকে কোপ ফেলবে? জবাবে বৈশাখী বললেন, “আসলে মানুষ এখনও কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল সেটা বুঝতে পারছে না। একজন প্রতিবাদী মুখ হঠাৎ করে প্রার্থী হয়ে গেল?”

তিনি একটু থামলেন। আবার শুরু করলেন, “কোনও অভিসন্ধি থাকতে পারে। হয়ত রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য এইগুলো হয়েছে তবে সত্যিটা প্রকাশ হওয়া উচিত।” তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল,”রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্নীতি কি তৃণমূলকে ব্যাকফুটে ফেলতে পারে?” তিনি বললেন,”রাজ্যে এখন শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছেয়ে গিয়েছে। অন্তত সিপিএমের আমলে এতটা ছিল না। আমিও অনেক লড়ে চাকরি পেয়েছি। তাই কষ্টটা বুঝি। কিন্তু এখন তো ১০০ শতাংশ দুর্নীতি।  এই প্রভাব ভোট বাক্সে কতটা পড়বে সেটা সময় বলবে, তবে এটা শিক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক।”

তাঁকে প্রশ্ন করা হল, এইবার ভোটে রাজ্যের কি ফলাফল হতে চলেছে? তিনি একটু ভেবে বললেন, “সিপিএম হয়ত ঘুরে দাঁড়াবে। কত আসন পাবে নাকি একটাও আসন পাবে না সেটা বলতে পারব না, তবে ওরা ওদের হারানো জমি ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে।  এই রাজ্যে তৃণমূল ভাল ফলাফল করবে বলে মনে হচ্ছে।”