কলকাতা, ৩ অক্টোবর: দশমী, বাঙালির অন্যতম বড় উৎসব। সারাবছরের পরিশ্রমের পর এই বিশেষ দিনে মানুষ খুশি হয়ে বিশেষ বিশেষ খাবারের আয়োজন করে। তবে এই আনন্দের পেছনে এক অন্ধকার দিকও রয়েছে, যেখানে পেট-পুজোর নামে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মানুষের স্বাস্থ্যকে (Unnhygenic Food in Durga Puja) উপেক্ষা করে কেবল মুনাফার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। আর সেই অনৈতিক কাজেরই রেশ উঠে এসেছে ডায়মন্ড হারবার শহরের রেস্তোরাঁ ও হোটেলগুলোতে। পুজোর দিন, বিশেষত দশমীর বিকালে, খাদ্য সুরক্ষা দফতর, পুলিশ, দমকল এবং পুরসভার যৌথ অভিযানে এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
দশমীর দিন দুপুরের পর থেকেই স্থানীয় প্রশাসন খাবারের মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক বিশেষ তদারকি শুরু করে। ডায়মন্ড হারবার শহরের ১১৭ নং জাতীয় সড়ক বরাবর অবস্থিত একাধিক রেস্তোরাঁ ও হোটেলে হানা দেয় যৌথ বাহিনী। প্রশাসনের কাছে খবর ছিল যে, বেশ কিছু রেস্তোরাঁ ও হোটেলে বিক্রির জন্য পুরনো বা পচা খাবার মজুত করা হচ্ছে, যেগুলো গরম করে বা মশলাপাতি দিয়ে আবার রান্না করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছিল।
যখন রেস্তোরাঁগুলোর রান্নাঘরে ঢোকা হয়, তখন সেখানকার অবস্থা দেখে সবাই চমকে ওঠে। ফ্রিজ খুলতেই বেরিয়ে আসে একের পর এক বাসি খাবার, পচা মাংস ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর (Unnhygenic Food in Durga Puja) উপকরণ। চাহিদা মেটাতে এবং খরচ কমাতে এই খাবারগুলো পুনরায় প্রস্তুত করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছিল। তাছাড়া, কিছু হোটেল থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় নিষিদ্ধ কেমিক্যাল এবং বেআইনি গ্যাস সিলিন্ডারও, যা ছিল মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে।
খাদ্য সুরক্ষা দফতরের অভিযানে শুধু বাসি খাবারই নয়, বরং অন্যান্য অনেক অবৈধ উপকরণও উদ্ধার করা হয়। বিশেষত, অনেক রেস্তোরাঁতে গোপনে রাখা ছিল পচা মাংস, যা পরে গরম করে পুনরায় পরিবেশন করা হচ্ছিল। এসব খাবার গরম করার জন্য বিপজ্জনক কেমিক্যালও ব্যবহার করা হচ্ছিল, যা খাবারের স্বাদ এবং পুষ্টির মানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এসব খাবারের গুণগত মানের কোন নিশ্চয়তা ছিল না, কিন্তু সেগুলোই সাধারণ মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছিল।