গণেশ মূর্তির মধ্যে দিয়ে আরজি কর ও হাতি-হত্যার অভিনব প্রতিবাদ বার্তা অপরাজিতার

যেকোন শুভ কাজের আগে আমরা প্রথমেই যার আরাধনা করে থাকি তিনি হলেন বিঘ্ননাশকারী, বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা গণেশ। শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে গণেশ…

aparajita adhya protested by making a ganesha statue

যেকোন শুভ কাজের আগে আমরা প্রথমেই যার আরাধনা করে থাকি তিনি হলেন বিঘ্ননাশকারী, বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা গণেশ। শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী। এদিন সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনায় মেতে উঠেছে টলি-বলি সব তারকারাই। সকলেই নিজেদের মতন করে গনেশ পুজো করে সেসব ছবি সমাজমাধ্যমের পর্দায় তুলে ধরছেন। কিন্তু এরই মধ্যে এক অভিনব কায়দায় মূর্তি গড়ে পুজো করলেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)।

এবার নিজের হাতে যত্ন সহকারে গণেশের মূর্তি বানিয়েছেন অভিনেত্রী। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে এই গণেশ মূর্তি গড়তে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই গণেশের মূর্তি অন্যানো গনেশের মূর্তি থেকে অনেকটাই আলাদা। এই গণেশ মূর্তির পরনে চিকিৎসকের সাদা অ্যাপ্রন ও গলায় স্টেথোস্কোপের পাশাপাশি কোলে রয়েছে একটি ছোট্ট হাতি। কিন্তু কেন এই অভিনব কায়দায় গণেশ মূর্তি গড়লেন তিনি? অপরাজিতা আঢ্যর কথায়, “প্রথম থেকেই ভেবেছিলাম, নিজের হাতে মূর্তি গড়ব।

   

এই পরিস্থিতিতে মনে হল, সবার আগে গণেশ পুজো হয়। সমস্ত দেবতার পুজোর আগে গণেশের পুজো করতে হয়। মা আসার আগে তাঁর ছেলের কাছেই প্রার্থনা করি। গণেশই তো মানুষকে সিদ্ধি দেন, চেতনা দেন। মানুষের চৈতন্য হোক। তাই, এই প্রতীকী মূর্তি।” সেইসঙ্গে আরজি করের প্রসঙ্গকে টেনে এনে তিনি লিখেছেন, “সবার আগে নির্যাতিতার বিচার চাইছি। দ্বিতীয়ত, আমরা সকলে যেন সুরক্ষিত থাকতে পারি। বিচার পেয়ে যেন আমরা জয়ের হাসি হাসতে পারি।

আমাদের মধ্যে যেন ভয় জায়গা না করে নেয়। ঈশ্বরের কাছে চাইছি, আমাদের উপর যেন কিছু চাপিয়ে না দেওয়া হয়। পাড়ার দাদা-কাকা বা কোন নেতা কী বলবেন, সেটা নিয়ে যেন না ভাবতে হয়। সঠিক গণতন্ত্র কায়েম হোক, এটাই চাইছি। গণতান্ত্রিক সমাজের নামে প্রহসন যেন বন্ধ হয়। মেয়েদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যেন কিছু না হয়।” তবে শুধু আরজি কর কাণ্ডই নয়, এর পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা হাতি হত্যা নিয়েও সমাজমাধ্যমের সেই দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন অপরাজিতা।

অভিনেত্রী লিখেছেন, “প্রার্থনার চেয়ে বড় সত্যি আমার কাছে কিছুই নেই। তাই প্রার্থনা করি, এই সমষ্টিগত দুঃসময় যেন কাটিয়ে উঠি আমরা। অন্ধকার যেন নিপাত যায় অতীব নির্লজ্জতায় সিদ্ধিরূপী, ন্যায়রূপী মহান আলোর সামনে! আমার গণপতির পরনে চিকিৎসকের পোশাক, তাতে ধর্ষকদের হাতের রক্ত-ছাপ; গণেশের কোলে সেই অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনী, যার নৃশংস খুন মন থেকে মুছে ফেলতে পারি না কিছুতেই।” প্রসঙ্গত, মুম্বইতে গিয়ে একটি সমস্যার সস্মুখীন হয়েছিলেন অভিনেত্রী।

তখনই মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে গিয়ে টলি অভিনেত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নিজের হাতে গণেশমূর্তি গড়বেন। সেই ভাবনা থেকেই চলতি বছরে নিজের হাতে গণেশের মূর্তি গড়ে আরাধানা করলেন অপরাজিত আঢ্য। আর এই গণেশমূর্তিকে সামনে রেখেই অভিনব কায়দায় আরজি কর কাণ্ডের পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা হাতি হত্যার বিষয়টিও যে তিনি তুলে ধরেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।