কলকাতার পর্ণশ্রীতে শুক্রবার রাত ৮টার সময় উদ্ধার হল বাবা এবং মেয়ে, দুজনের মৃতদেহ। ২২ বছর বয়সী সৃজা দাস এবং তার বাবা সজন দাসের মৃতদেহ একটি অফিসের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, সৃজা অটিজমে আক্রান্ত ছিলেন এবং তার চিকিৎসা চলছিল। সজনের বয়স ছিল ৫৩ বছর এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সজন তার মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং সোয়া ১টার দিকে স্ত্রীর কাছে ফোন করে জানান, তারা এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে গেছেন। এর কিছু ঘণ্টা পরে, সজনের স্ত্রী জলি দাস আবার ফোন করেন, তবে সজন ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পর জলি চিন্তিত হয়ে এক আত্মীয়কে, রঞ্জিৎকুমার সিংহকে ফোন করেন। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে, অফিসের এক কোণে সৃজা এবং সজনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর, সজনের স্ত্রী জলি দাসকে জেরা করা হয়। পুলিশ জানায়, দেহ দুটি পাখার হুক থেকে নাইলনের দড়িতে ঝুলছিল। এর পাশাপাশি, প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জানা যায়, সজনের স্ত্রী যখন ফোন করেছিলেন, তখন বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল না, কিন্তু ভিতরে ঢুকে কোনো সজাগ সঙ্কেত পাওয়া যায়নি।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছে, সজন সম্ভবত তার মেয়ের চিকিৎসা খরচ এবং শারীরিক অবস্থার কারণে হতাশা ও অবসাদে ভুগছিলেন। সৃজা জন্ম থেকেই অটিজমে আক্রান্ত ছিলেন, যার জন্য তার চিকিৎসা চলছিল। সজনের আর্থিক চাপের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এমন ধারণাও তৈরি হয়েছে। এদিকে, পুলিশ ঘটনাস্থলে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ দুটি পাঠিয়েছে। পাশাপাশি, পুলিশ আর্থিক সমস্যার কারণেই এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্প্রতি ট্যাংরা এলাকার একটি ট্রাজেডির সাদৃশ্যও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিছু দিন আগে, ট্যাংরার একটি পরিবারের তিন সদস্যের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই পরিবারের বাকি তিন সদস্য বাইপাসের ধারে দুর্ঘটনার শিকার হন। পর্ণশ্রীর ঘটনা সেই ঘটনার ছায়া তৈরি করেছে, পুলিশ আরো তদন্ত চালাচ্ছে।