দীর্ঘ ১৫ বছরের আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে স্বস্তির (Calcutta High Court) নিঃশ্বাস মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগপ্রার্থীদের মধ্যে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি সেনের এজলাস থেকে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগে ছাড়পত্র মিলেছে। আদালতের রায় অনুযায়ী, আগামী ২১ দিনের মধ্যে ফলপ্রকাশ করতে হবে কমিশনকে। এই নির্দেশের পর আর কোনও আইনি বাধা রইল না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।(Calcutta High Court)
২০০৯-১০ সালে, তৎকালীন বাম সরকার মাদ্রাসা স্কুলে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। এরপর পরের বছর, অর্থাৎ ২০১১ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা বহু জটিলতায় থমকে যায়। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার পরেই একাধিক চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তোলেন। (Calcutta High Court) মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পুনরায় পরীক্ষা নেয়। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফলত, একের পর এক মামলা দায়ের হতে থাকে কলকাতা হাই কোর্টে। এইসব আইনি জটিলতার কারণে বছরের পর বছর নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকে।(Calcutta High Court)
এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে প্রায় ২৯২টি গ্রুপ ডি শূন্যপদ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল। চাকরিপ্রার্থীরা আশাহত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ বয়সসীমা পেরিয়ে গিয়েছেন, কেউ আবার ভিন্ন পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য হয়েছেন। তবুও, অনেকেই এই নিয়োগের আশায় লড়াই চালিয়ে গেছেন আদালতে। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই, বুধবার।(Calcutta High Court)
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি সেন মামলার সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে জানান, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দেন যে, আগামী ২১ দিনের মধ্যে গ্রুপ ডি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে। এর ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর কোনও রকমের আইনি বাধা থাকছে না।(Calcutta High Court)
এই রায়ের পর স্বভাবতই খুশির হাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে। অনেকেই বলছেন, এই রায় তাদের জীবনের নতুন দিশা দেখাল। বহু বছর ধরে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় কাটিয়েছেন তাঁরা। এখন শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম অথরিটির কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে তাঁরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছেন।(Calcutta High Court)
আইনি মহলের মতে, এই মামলাটি শুধুমাত্র একটি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় ছিল না—এর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রশাসনিক অচলাবস্থার এক প্রতিচ্ছবি প্রকাশ পেয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, সময়মতো ফলপ্রকাশ এবং প্রার্থীদের প্রতি সুবিচার – এই সব কিছুর ওপরেই প্রশ্ন উঠেছিল। সেইসব প্রশ্নের জবাব দিল এই রায়।(Calcutta High Court)
রাজ্য সরকার এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের তরফেও জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনে দ্রুত ফলপ্রকাশ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এই রায় শুধুমাত্র গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগে জট কাটাল না, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। আইনি পথ ধরে দীর্ঘ লড়াইয়ের পরও যে ন্যায় মিলতে পারে, এই রায় তারই প্রমাণ।