মঙ্গলবার ভোররাতে কলকাতার নবান্নের (Howrah) কাছেই ঘটে গেল এক ভয়াবহ ঘটনা। খিদিরপুর থেকে লিলুয়ার দিকে যাওয়ার পথে একটি ১৪ চাকার কন্টেনার উলটে পড়ে, যার ফলে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় দ্বিতীয় হুগলি সেতুর একাংশে। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রবল ভোগান্তির শিকার হন এবং পুরো এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।
ঘটনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরে খিদিরপুর থেকে লিলুয়ার দিকে যাত্রা করছিল একটি বড় কন্টেনার। কন্টেনারটি মন্দিরতলার (Howrah) মোড় ঘুরে বাসস্ট্যান্ডের কাছে পার্ক করেছিল এবং চালকও নেমে গিয়েছিলেন। কিন্তু আচমকাই কন্টেনারটি পড়তে থাকে এবং আড়াআড়ি ভাবে মন্দিরতলার দ্বিতীয় হুগলি সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের ফ্লাইওভারের দিকে চলে যায়। এর ফলে সেতুর একাংশে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সারা শহর থেকে কলকাতা ও কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসা সমস্ত গাড়ি আটকে পড়ে, ফলে এলাকার বাসিন্দাদের এবং অফিস যাত্রীদের জন্য অসহনীয় দুর্ভোগ তৈরি হয়।
ঘটনার পরেই পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। প্রথমে, একটি ছোট ক্রেন এনে কন্টেনারটি সরানোর চেষ্টা করা হয়, তবে তা সফল হয়নি। কন্টেনারটি অনেক ভারী হওয়ায়, পুলিশের এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও বড় ক্রেন এনে কন্টেনারটি তোলা হয়। প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টা শেষে কন্টেনারটি সরানো সম্ভব হয় এবং ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এদিকে, এই ঘটনার ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ এবং অফিস যাত্রীরা شدید ভোগান্তিতে পড়েন। সকাল থেকেই হুগলি সেতুর একাংশ বন্ধ থাকায় কলকাতা এবং লিলুয়ার মধ্যে যাতায়াত করা অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। গাড়ির দীর্ঘ লাইন তৈরি হয় এবং অনেকেই কর্মস্থলে পৌঁছাতে দেরি করেন। বিশেষ করে, যারা সকালবেলা কলকাতা শহরে কাজে আসছিলেন, তাদের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
তবে, এই ঘটনা নিয়ে প্রশাসন এবং স্থানীয় পুলিশ একযোগে কাজ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। এমনকি, যানজট কমাতে তারা বিকল্প রুট ব্যবহার করতে বাস এবং অন্যান্য যানবাহনগুলোকে পরামর্শ দেন। এরপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং সকাল ১১টার পর থেকে যান চলাচল শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কন্টেনারটি উলটে পড়ার ঘটনায় দীর্ঘ সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকায় তারা অনেক সমস্যায় পড়েন। এলাকার বাসিন্দাদের মতে, এটি একটি বড় ধরনের বিপত্তি ছিল এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তা সকলের জন্য বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তারা প্রশাসনের কাছে আরও ভালো ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে কন্টেনারটি ঠিকভাবে পার্ক করা হয়নি কেন এবং কিভাবে তা উলটে পড়ল। পুলিশ প্রশাসন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং পুরো ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করছে।