‘কমিশন নয়, বিজেপির দালাল’ — SIR বিতর্কে ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিষেক

ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ প্রকল্প, SIR বা Special Intensive Revision-কে কেন্দ্র করে ফের কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন তৃণমূল কংগ্রেসের…

Team Abhishek Takes to Delhi Streets to Defend Bengali Pride

ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ প্রকল্প, SIR বা Special Intensive Revision-কে কেন্দ্র করে ফের কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “এই SIR নামক প্রকল্প আসলে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক তৈরির একটি চালাকি। তারা বিহারে কুকুরের নামেও ভোটার কার্ড করিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও সেই চেষ্টাই চলছে।”

নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি আক্রমণ

   

অভিষেকের অভিযোগের তীর শুধু বিজেপির দিকে নয়, সমানভাবে গিয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশনের দিকেও। তাঁর কথায়, “কমিশন এখন বিজেপির তল্পিবাহক হয়ে গিয়েছে। তাদের স্বতন্ত্রতা বলে কিছু নেই। আজ কমিশনের ভূমিকা দেখে বোঝা যাচ্ছে, গণতন্ত্র রক্ষা নয়, বরং বিজেপির রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করাই তাদের একমাত্র কাজ।”

তিনি আরও বলেন, “একটা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কমিশনের উচিত সবার কথা শোনা, নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। কমিশনের ভূমিকা এখন কার্যত বিজেপির অঘোষিত সহযোগী সংগঠনের মতো।”

বিহারে উদাহরণ টেনে বিজেপিকে কটাক্ষ

বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় কীভাবে অবৈধভাবে নাম তোলা হয়েছিল, তার উদাহরণ তুলে ধরেন অভিষেক। তিনি বলেন, “বিহারে কুকুরের নামেও ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, বহু মৃত ব্যক্তি এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর নামও তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই কাজ করেছে বিজেপিই, যাতে তারা নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে পারে। এখন পশ্চিমবঙ্গেও সেই একই ছক অনুসরণ করা হচ্ছে।”

বাংলার প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা

সম্প্রতি রাজ্যের বিরুদ্ধে বিজেপির একাধিক অভিযোগ, বিশেষ করে সিআইডি এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচন কমিশনের দারস্থ হয়েছেন। এরই পাল্টা হিসেবে অভিষেকের অভিযোগ, “রাজ্যে যা কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্প হচ্ছে, তা দেখে বিজেপি আতঙ্কিত। তাই তারা এখন নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাংলার প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। এটা একেবারেই অশুভ সংকেত।”

Advertisements

অভিষেকের হুঁশিয়ারি

তৃণমূল সাংসদের কণ্ঠে ছিল হুঁশিয়ারির সুরও। তিনি স্পষ্ট বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে যথাযথ নথি সহকারে প্রতিবাদ জমা দেব। প্রয়োজনে গণআন্দোলনে নামব। SIR-এর নামে বাংলার মাটিতে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক বানানোর চেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না।”

তিনি আরও জানান, “যদি কমিশন সত্যিই নিরপেক্ষ হয়, তাহলে কেন বাংলায় হঠাৎ এত বেশি ফর্ম জমা পড়ছে সেই বিষয়ে তদন্ত করবে। যদি তারা সেটা না করে, তাহলে স্পষ্ট বোঝা যাবে কমিশন বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছে।”

সমর্থন পাচ্ছে অভিষেকের বক্তব্য?

রাজনৈতিক মহলে অভিষেকের এই মন্তব্য নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তৃণমূলের অন্যান্য নেতারাও তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন। যুব তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “অভিষেক বাবুর বক্তব্য বাংলার মানুষের মনের কথা। মানুষ এখন বুঝে গেছে কে গণতন্ত্র রক্ষা করছে আর কে গণতন্ত্রের ভিত নাড়িয়ে দিচ্ছে।”

অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য অভিষেকের এই বক্তব্যকে ‘চূড়ান্ত দেউলিয়া রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে।