নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য একটি স্পষ্ট বার্তা দিল, দলের লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২১৫ আসন পাওয়ার। অভিষেকের এই ঘোষণা দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্যম এবং দৃঢ়তার সঞ্চার করেছে। তিনি বলেছেন, “২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২১৫-এর বেশি আসনে জয়ী হবে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন।”
এদিনের মেগা মঞ্চে অভিষেক তৃণমূলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলায় শাসক দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলকে এক ছটাক জমিও ছাড়বেন না। তিনি বলেন, “২০১৪ থেকে আজ পর্যন্ত আমরা আসন বাড়াতে পেরেছি, কিন্তু আগামী নির্বাচনে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে হবে। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে একে একে পরাস্ত করেই আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। আমরা একাই লড়াই করব, তৃণমূল একাই যথেষ্ট।”
অভিষেক আরও বলেন, “বিজেপি একদিকে সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স এবং কিছু সংবাদ মাধ্যম ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তাদের একটাই দিক রয়েছে, তারা আমাদের মতো একঝাঁক নিষ্ঠাবান কর্মী তৈরি করতে পারেনি। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বুক দিয়ে রাজ্যকে আগলে রাখে। আর তাদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলা জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে।”
এদিনের আলোচনায়, সন্দেশখালির ঘটনাও উঠে আসে। অভিষেক বলেন, “আজ থেকে এক বছর আগে, ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলায় কী পরিস্থিতি ছিল, সেটা মনে রাখুন। কীভাবে বসিরহাটের একটা ঘটনা কেন্দ্র করে বিরোধীরা বাংলাকে কলুষিত করার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছিল, কিন্তু তাদের মিথ্যাচারের কারণে সেই আসন ১২-এ নেমে গেছে। জনগণ তাদের বিশ্বাসঘাতকতার কড়া জবাব দিয়েছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের যে ধারাবাহিক উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথ অনুসরণ করছে, তা তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “বাংলায় ফের উঠবে সবুজ ঝড়। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে আবার ক্ষমতায় ফিরবে তৃণমূল। বাংলার উন্নয়নকে যারা আটকে রাখতে চেয়েছিল, তারা এবার আর কিছু করতে পারবে না। বিজেপি একাই দাঁড়াতে পারবে না, কারণ বাংলা একা লড়বে না, বাংলা থাকবে তৃণমূলের সঙ্গে।”
অভিষেকের এই বক্তব্য দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আরও বেশি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের নানা আক্রমণ এবং ষড়যন্ত্রের মধ্যেও দলের শৃঙ্খলা বজায় রেখে, আগামী দিনে আরও শক্তিশালী হয়ে এগিয়ে যাওয়ার সংকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২৬-এর নির্বাচনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে, এবং দলের নেতৃত্ব সজাগ এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।