বিজেপিকে বাউন্সারে ঘায়েল করতে প্রস্তুত তৃণমূল নেত্রী

আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ তুঙ্গে। (Mamata Banerjee) একদিকে যেমন বিরোধীরা একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে তৃণমূল তাদের ‘উন্নয়ন’…

6 Key Challenges Facing Mamata Banerjee Ahead of the 2026 Assembly Elections

আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ তুঙ্গে। (Mamata Banerjee) একদিকে যেমন বিরোধীরা একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে তৃণমূল তাদের ‘উন্নয়ন’ কৌশলকে প্রধান অস্ত্র হিসেবে তুলে ধরছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যারা (Mamata Banerjee) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনবার ক্ষমতায় রয়েছেন, তাদের নেতৃত্বে গত এক দশক ধরে রাজ্য নানা ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে বলে দাবি তৃণমূলের। কিন্তু এই উন্নয়নকেই বিরোধীরা দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার আখ্যা দিয়ে একের পর এক কাদা ছোড়ার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন, সেটিই আগামী নির্বাচনে বড় ভূমিকা নেবে(Mamata Banerjee) 

দুর্নীতি ইস্যু এবং তৃণমূলের পাল্টা দাবি

   

২০২২ সালের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তির গ্রেপ্তারি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত ছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কার্যকলাপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে তৃণমূল বারবার নিজেদের ‘সাফ’ বলে দাবি করেছে। যদিও বিচারিক প্রক্রিয়া এখনো চলমান, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত করেছেন যে এসব শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। বর্তমানে জামিনে মুক্ত জ্যোতিপ্রিয়, অনুব্রতরা রাজ্য রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ।(Mamata Banerjee) 

বিরোধীরা যখন দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ করছে, তৃণমূল তাদের উন্নয়নমূলক কাজগুলোর মাধ্যমে সমর্থকদের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, রাজ্যের উন্নয়নই তার প্রকৃত প্রমাণ, আর এই পথেই আগামী নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন লাভ সম্ভব।

শিক্ষক নিয়োগ এবং ২৬ হাজার চাকরিহারা

বিগত বছরের আরেকটি বড় ইস্যু ছিল ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই শিক্ষকরা চাকরিহারা হয়ে পড়েন, তবে তৃণমূল সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এই বিষয়টিকে সমাধান করার চেষ্টা করেছে। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে যে, ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সবেতন চাকরি দেওয়া হবে, এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য ভাতাও প্রদান করা হবে। এর পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ছাত্রদের ভবিষ্যতের জন্য সবকিছু করছি। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি।’’ তৃণমূলের এই পদক্ষেপ বিরোধীদের সমালোচনা সত্ত্বেও শিক্ষক সমাজের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ কাণ্ড: নিরাপত্তা বাড়ানো

Advertisements

কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাটি রাজ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশ প্রথমে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে। পরে সিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেয়, তবে কলকাতা পুলিশের তদন্তেই সিলমোহর দেয় সিবিআই। আদালত সঞ্জয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে।(Mamata Banerjee) 

এছাড়া, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য সরকার নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চিকিৎসকদের প্রতি আক্রমণ এবং তাদের নিরাপত্তা বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার নির্দেশে হাসপাতালগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে(Mamata Banerjee) 

কসবা কাণ্ড: আইন কলেজে তরুণীর গণধর্ষণ

রাজ্য রাজনীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল কসবা কাণ্ড, যেখানে একটি আইন কলেজে তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় রাজ্য সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তদন্তের পাশাপাশি, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি বন্ধ রাখা হয়েছে। কসবা কাণ্ডের পর, রাজ্য সরকার কলেজগুলোতে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য কড়া নজরদারি চালাচ্ছে(Mamata Banerjee) 

নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং মমতার বার্তা

এই সব ইস্যুর মধ্যে তৃণমূলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ (Mamata Banerjee) হলো বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী শক্তির সমালোচনার মুখে নিজেদের অবস্থান কীভাবে শক্তিশালী করা যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতিতে বারবার বলছেন, “আমরা জনগণের জন্য কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও করি। উন্নয়নই আমাদের অস্ত্র।” শহিদ সমাবেশের মঞ্চে তিনি আবারও এই বার্তা দেন, যেখানে বিরোধীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের অপ্রতিরোধ্য সংগ্রামের ডাক দেন।(Mamata Banerjee) 

এই সময়ে তৃণমূলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সফলতা এবং জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে জনগণের পাশে থাকতে চান।