বিমানবন্দর যাওয়ার ৩ রুটে বাস পরিষেবা বন্ধ, দুর্ভোগে হাজারো যাত্রী

কলকাতা বিমানবন্দরের দিকে যাতায়াতকারী যাত্রীদের জন্য গত তিনদিনে এক দুর্ভোগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ৪৬, ৪৬এ এবং ৪৬বি রুটে মোট ৬৩টি বাস বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ…

46 Bus Service Halted for Last Three Days, Commuters Face Severe Disruptions"

কলকাতা বিমানবন্দরের দিকে যাতায়াতকারী যাত্রীদের জন্য গত তিনদিনে এক দুর্ভোগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ৪৬, ৪৬এ এবং ৪৬বি রুটে মোট ৬৩টি বাস বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াত একেবারে ব্যাহত হয়েছে।

এই রুটগুলির মাধ্যমে বিমানবন্দর থেকে বাগুইআটি, কেষ্টপুর, চিনারপার্ক, কাঁকুরগাছি হয়ে কলেজ স্ট্রিট পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয়। কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী প্রতিদিন এই বাসে চড়েন, কিন্তু একাধিক সমস্যা ও শ্রমিক আন্দোলনের কারণে বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় তারা বিপদে পড়েছেন।

বাস মালিকদের অভিযোগ, বন্ধ বাস পরিষেবার জন্য দায়ী এক শ্রমিক নেতা, যাঁর নাম হীরালাল খেওড়। এই শ্রমিক নেতা বোনাসের টাকা তছরুপের অভিযোগে অভিযুক্ত। বাস মালিকদের দাবি, তিনি চাপ দিয়ে টাকা আদায় করতে চাইছিলেন এবং তাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এসবের ফলে আতঙ্কিত হয়ে বাসকর্মীরা কাজে যোগ দিতে চাইছেন না। দীর্ঘদিন ধরে এই শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে বাস মালিকদের ও কর্মীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল, কিন্তু এতদিন তারা একত্রিত হতে পারেনি। তবে এবার সকলেই একত্রিত হয়ে এই ৬৩টি বাস পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যেহেতু এই রুটগুলিতে চলা বাসগুলি কলকাতার এক গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত, তাই এর বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি দিন প্রায় ২৫০-৩০০ জন বাস কর্মী এই রুটগুলিতে কাজ করেন, যাদের কাজ বন্ধ থাকার কারণে তারা নিজেদের জীবনযাত্রায় সমস্যায় পড়েছেন। বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে শিক্ষার্থী, অফিসগামী, ও অন্যান্য জরুরি কাজের জন্য যাতায়াতকারী মানুষের জন্য পরিস্থিতি একেবারে অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, যারা বিমানবন্দর থেকে কাজের জন্য যেতে বা আসতে বাধ্য হন, তাদের জন্য এটি ছিল এক বড় সমস্যা।

রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবারই তিনি এই সমস্যায় হস্তক্ষেপ করবেন এবং চেষ্টা করবেন যাতে বাস চলাচল আবার শুরু করা যায়। বাস মালিকদের সংগঠন রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের প্রিন্সিপাল সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, তবে এখনো পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের কোন স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

Advertisements

এই পরিস্থিতি যেখানে বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে, সেখানে সাধারণ যাত্রীদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই রুটগুলিতে যাতায়াত করেন, তাদের অনেকেই অন্যান্য বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা এই বাস পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, এবং তাদের জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়া এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন সকলের চোখ পরিবহণ মন্ত্রীর দিকে, যিনি আশা করেছেন যে তিনি শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান করবেন এবং নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবেন। সবার আশা, দ্রুত সমস্যার সমাধান হলে শহরের পরিবহণ ব্যবস্থা আবার স্বাভাবিক হতে পারে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে।