নিয়োগ মামলায় স্বস্তি, জামিন পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) অবশেষে নবম ও দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন। এই মামলাটি সিবিআই (CBI)-এর দায়ের করা এবং বিচারাধীন ছিল…

3. Bail for Ex-Education Minister Partha Chatterjee in School Recruitment Scam

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) অবশেষে নবম ও দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন। এই মামলাটি সিবিআই (CBI)-এর দায়ের করা এবং বিচারাধীন ছিল আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে। বহুদিন ধরে চলা শুনানি শেষে, আদালত ৭,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে পার্থের জামিন মঞ্জুর করে। তবে এখনও তার জেল থেকে মুক্তি মিলছে না, কারণ অন্যান্য মামলাগুলির তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া চলমান।

সিবিআইয়ের গ্রুপ সি মামলায় আগেই জামিন

   

উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) সিবিআইয়ের দায়ের করা গ্রুপ সি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন। এটি ছিল তার জন্য একটি বড় আইনি জয়। কিন্তু এখনকার জামিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই প্রথম কোনও নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেলেন তিনি। এর ফলে তার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নতুন গতি আসতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মামলার পটভূমি

২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। চাকরিপ্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হন। একাধিক পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়ার নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরে। তার পর থেকেই সিবিআই ও ইডি এই মামলার তদন্তে নামে। সেই সূত্রে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা এবং সোনা রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন তোলে।

এখনও কেন জেলমুক্তি নয়?

Advertisements

যদিও নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ মামলায় পার্থ জামিন পেলেন, কিন্তু তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে—যেমন গ্রুপ ডি, উচ্চ প্রাথমিক এবং আরও কিছু নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ। এই মামলাগুলিতে এখনও জামিন পাননি তিনি। ফলে আদালতের অনুমতি ছাড়া কারাগার থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর, প্রতিটি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তাই একটি মামলায় জামিন পেলেও, অন্যান্য মামলায় তাকে জেল হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই জামিন প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত শাসকদল বা বিরোধীদল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই জামিন রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। অনেকের ধারণা, দীর্ঘদিন বিচারবিভাগে আটকে থাকার পরে একে একে জামিন পাওয়ার ঘটনা পার্থর আইনজীবীদের কৌশলের সফলতা হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে।

জামিন পাওয়া মানেই মামলা শেষ হয়ে যাওয়া নয়। এখনও বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। সিবিআই ও ইডি-র পক্ষ থেকে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং একাধিক চার্জশিট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে। আগামী দিনে এই মামলাগুলির শুনানি ও রায় কীভাবে এগোয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলমুক্তি কবে হবে, আদৌ হবে কি না, তা পুরোপুরি নির্ভর করছে বিচারব্যবস্থার উপর।