কলকাতা (Kolkata) শহরের পানীয় জল ( water) সরবরাহ (supply) ব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। আগামী ১৪ ডিসেম্বর,( December ) বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ১৫ ডিসেম্বর, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত শহরের কিছু অংশে জল সরবরাহ বন্ধ ( shutdown)থাকবে। পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, টালা এবং পলতা জল সরবরাহ কেন্দ্রগুলিতে জরুরি মেরামতের কাজ চলছে, যার কারণে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ফের জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ সময় বলেন, ‘‘টালা এবং পলতায় জরুরি ভিত্তিতে কিছু মেরামত কাজ প্রয়োজন, এবং এই কাজগুলি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ১৪ ডিসেম্বর (December) থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জল সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে। তবে, ১৫ ডিসেম্বর থেকে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘এই কাজগুলি বিশেষভাবে গ্রীষ্মকালে জল সরবরাহের চাপ সামলাতে সাহায্য করবে এবং ভবিষ্যতে পানীয় জল (drinking water) সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।’’
মেয়রের বক্তব্য অনুযায়ী, এই মেরামতের কাজের কারণে শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেমন উত্তর কলকাতা, মধ্য কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতার অন্তত সাতটি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এছাড়া, সল্টলেক এলাকা এবং তার আশপাশের কিছু এলাকাতেও জল সরবরাহ বন্ধ থাকবে। যদিও পুরসভা জানিয়েছে, জল সরবরাহের এই বিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে না এবং নির্দিষ্ট সময়ে ফের চালু হয়ে যাবে।
জল সরবরাহ বন্ধ হওয়ার বিষয়টি শহরবাসীর জন্য যথেষ্ট অস্বস্তির সৃষ্টি করতে পারে, তবে পুরসভা জানিয়েছে যে, তারা এ বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই সময়কালে বাসিন্দাদের জল সংকটে না পড়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই সব এলাকায় অস্থায়ী জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে এবং বাসিন্দাদের জন্য ট্যাঙ্কার চালু করা হবে।
টালা ও পলতা জল সরবরাহ কেন্দ্রের মেরামতের কাজটি অত্যন্ত জরুরি। এদিকে, পুরসভা জানিয়েছে, এই দুই কেন্দ্রের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চালানো এবং গ্রীষ্মকালে জল সরবরাহে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটানো থেকে বিরত থাকার জন্য জরুরি মেরামত করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পাইপের ছিদ্র মেরামত, চেক ভালভের কাজ, জল চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য অদক্ষতার সংশোধন। এসব কাজের জন্য মোট ৫০টি আলাদা মেরামত কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘‘পলতা থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৪২ মিলিয়ন গ্যালন জল উৎপাদন করা হয়, তবে টালা ট্যাঙ্কের ধারণ ক্ষমতা সীমিত থাকার কারণে সারা শহরে পুরোটা সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। তাই কিছু জল সংরক্ষিত রাখা হয়, যা পরবর্তীতে সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হয়।’’ এর ফলে, টালা এবং পলতা জল সরবরাহ কেন্দ্রের কার্যক্রমের মেরামত নিশ্চিত করতে শহরের জল সরবরাহ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
অধিকতর উন্নয়ন ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:
পুরসভা জানিয়েছে, জল সরবরাহের এই বিরতি শুধুমাত্র মেরামত কাজের জন্য নেওয়া হয়েছে এবং ১৫ ডিসেম্বর থেকে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শহরের ভবিষ্যতের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। গ্রীষ্মকালীন মাসগুলিতে যাতে কোনো ধরনের পানীয় জল সংকট না হয়, সে জন্যই এই মেরামতের কাজ করা হচ্ছে।
কলকাতা শহরের দ্রুত নগরায়ণ এবং জনগণের চাপের কারণে জল সরবরাহ ব্যবস্থাকে দীর্ঘমেয়াদীভাবে টেকসই ও কার্যকরী করার জন্য পুরসভা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ভবিষ্যতে জল সরবরাহে কোনো ধরণের সমস্যা যাতে সৃষ্টি না হয়, তার জন্য নিয়মিত মেরামত এবং সংস্কার কাজ করা হবে।
পুরসভা জানিয়েছে, শহরের ৬৫ শতাংশ এলাকায় জল সরবরাহের এই বিরতির সময় সীমিত হবে, এবং এটি শুধু মেরামত কার্যক্রমের জন্য। এর ফলে, আগামী দিনে শহরের জল সরবরাহ ব্যবস্থায় এক দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা আসবে, যা গ্রীষ্মকালে বিশেষভাবে কার্যকরী হবে।
তবে, পুরসভা বাসিন্দাদের জন্য কিভাবে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, সে সম্পর্কে তারা দুঃশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছে। জল সরবরাহের আংশিক বিরতির সময়টুকু অতিক্রম করার পর, আবার পুরসভা তার পুরোপুরি কার্যক্রম স্বাভাবিক করবে।