অসম: জনপ্রিয় অসমীয়া গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুর খবর শোনার পর সঙ্গীতপ্রেমীরা গভীর শোকাহত হয়েছেন। সিঙ্গাপুর পুলিশ ও অটোপসি রিপোর্টের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, গায়কের মৃত্যু হয়েছে সাঁতার কাটার সময় ডুবে যাওয়ায়। পূর্বে শোনা যায়েছিল, স্কুবা ডাইভিং চলাকালীন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু অটোপসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে এই গুজব সত্য নয়।
১৯ সেপ্টেম্বর জুবিন গর্গ সিঙ্গাপুরের সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটছিলেন। হঠাৎ করে তিনি জলে তলিয়ে যান। সঙ্গে থাকা লোকজন পুলিশকে খবর দেয় এবং স্থানীয় উদ্ধারকারী দল তাঁকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আইসিইউ-তে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
জুবিন গর্গ তখন সিঙ্গাপুরে ছিলেন ভারত-সিঙ্গাপুর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০তম বর্ষ উদযাপন এবং ভারত-আসিয়ান পর্যটন বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য। তিনি সেই দিন ‘নর্থ ইস্ট ফেস্টিভ্যাল’-এ পারফর্ম করার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে সেই অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
অসম সিআইডি’র বিশেষ তদন্ত দল (SIT) এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করছে। ইতিমধ্যেই নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত এবং জুবিন গার্গের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই অভিযুক্তকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
সিঙ্গাপুর পুলিশ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, মৃত্যুর পেছনে ফৌলপ্লে বা হত্যার কোনো প্রমাণ নেই। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচারিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যুর সম্পূর্ণ ঘটনা ও অবহেলার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।
জুবিন গর্গের অকাল প্রয়াণে শুধু অসম নয়, পুরো উত্তর-পূর্ব ভারত শোকাহত। ভক্তরা তাঁর গান, পরিবেশনা ও ব্যক্তিত্বকে মনে রেখেই শোক প্রকাশ করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার পোস্ট, স্মৃতিচারণা ও শোকবার্তা ছড়িয়েছে।
এই দুর্ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সাঁতার বা সমুদ্র সংক্রান্ত যেকোনও কার্যক্রমে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সতর্কতা অপরিহার্য। সিঙ্গাপুর পুলিশের দ্রুত ব্যবস্থা এবং আইসিইউ চিকিৎসা সত্ত্বেও, দুর্ঘটনার মাত্রা প্রতীয়মান।
জুবিন গর্গের মৃত্যু অসম্ভব শূন্যতা সৃষ্টি করেছে সঙ্গীত জগতে। তদন্তের অগ্রগতি এবং সম্ভাব্য বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সকলের নজর এখন সিঙ্গাপুর ও অসমে।