কলকাতা: অসমের সঙ্গীত জগতের আইকন জুবিন গর্গ-এর অকাল প্রয়াণ নিয়ে তদন্তের জট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। শুক্রবার সিঙ্গাপুর পুলিশ ভারতের অনুরোধে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাই কমিশনের হাতে হস্তান্তর করেছে। রিপোর্টে মৃত্যুর প্রাথমিক তথ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ভিডিয়ো বা ছবি ছড়ানো নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
গ্রেফতারির ধারা: চারজন ইতিমধ্যেই পুলিশ হেফাজতে
গত বৃহস্পতিবার, অসম পুলিশের সিআইডি জুবিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, সহ-সংগীতশিল্পী শেখর জ্যোতি গোস্বামী এবং সহ-গায়িকা অমৃতপ্রভা মহন্ত-কে গ্রেফতার করেছে। এর ফলে এই ঘটনায় মোট গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার।
সিআইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)-এর প্রধান মুন্নাপ্রসাদ গুপ্তা জানিয়েছেন, ধারাবাহিক জেরার পর এই দুই শিল্পীকে রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে বুধবার গ্রেফতার করা হয় North East India Festival-এর মূল আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত এবং জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা-কে।
কামরূপ (মেট্রো) জেলার সিজেএম আদালত তাদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে প্রেরণ করেছে। মামলায় নতুন ভারতীয় ফৌজদারি বিধি (BNS)-এর আওতায় হত্যার ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পটভূমি Zubeen Garg autopsy report
৫২ বছর বয়সী জুবিন গর্গ ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিংয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। মরদেহ প্রথমে দিল্লিতে আনা হয় এবং রবিবার সকালে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে গুয়াহাটি পৌঁছয়।
অনুসন্ধান ও পরিবারিক প্রশ্ন
অসম জুড়ে গায়কের অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া। তদন্ত চলাকালীন জুবিনের স্ত্রী গরিমা জানিয়েছেন, গায়ক ক্লান্ত থাকা সত্ত্বেও তাঁকে পিকনিক এবং সাঁতার কাটতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যত্ন কি যথাযথ নেওয়া হয়েছিল?”
গরিমা আরও জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগের রাতে জুবিনের সঙ্গে তাঁর শেষ কথোপকথনে কোনও পিকনিক বা সাঁতার করার পরিকল্পনার কথা জানা যায়নি। তাই তাঁর মতে, আচমকা নেওয়া পরিকল্পনার পেছনে এখনও অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ রয়ে গিয়েছে।
পরবর্তী ধাপ
সিঙ্গাপুর থেকে প্রাপ্ত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত তদন্তকে আরও স্পষ্ট এবং কার্যকর করবে। এতে জানা যাবে, জুবিনের মৃত্যু সত্যিই দুর্ঘটনাজনিত ছিল নাকি নেপথ্যে অন্য কোনও প্রভাব ছিল।