বরেলি ২৭ সেপ্টেম্বর: বরেলিতে শহরে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘আই লাভ মোহাম্মদ’ প্রচারণার সমর্থনে একটি বিক্ষোভ (Communal Violence)সাম্প্রদায়িক হিংসার রূপ নেয়। এই বিক্ষোভে পাথর ছোড়া ছুড়ি এবং লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে মাথায় রেখে শান্তি রক্ষার জন্য শনিবার স্থানীয় পুলিশ ডিআইজি অজয় কুমার সাহনির নেতৃত্বে একটি ব্যাপক ফ্ল্যাগ মার্চে অংশগ্রহণ করেছে।
প্রতিবাদকারীরা আলা হজরত দরগাহ এবং ইত্তেহাদ-ই-মিল্লাত কাউন্সিল (আইএমসি) প্রধান মৌলানা তৌকির রজা খানের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে ‘আই লাভ মোহাম্মদ’ প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় ১০-২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন, এবং ৩০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার এই ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা করেছেন।
#WATCH | Bareilly Police, under the leadership of DIG Ajay Kumar Sahni, conduct a flag march after yesterday’s protests by a group of people who gathered outside Ala Hazrat Dargah & IMC chief Maulana Tauqeer Raza Khan’s house, holding ‘I Love Mohammad’ placards. The protestors… pic.twitter.com/cakU6r6rBZ
— ANI (@ANI) September 27, 2025
গতকালের ঘটনা বরেলির ইসলামিয়া গ্রাউন্ড এবং দরগাহ এলাকায় সকাল থেকেই উত্তেজনার ছায়া ফেলে। মৌলানা তৌকির রজা খান, যিনি বারেলভি সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী নেতা, ‘আই লাভ মোহাম্মদ’ প্রচারের সমর্থনে একটি মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। এই প্রচার সাম্প্রতিক সময়ে কানপুর, গান্ধীনগর এবং দাভাঙ্গের মতো জায়গায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে ‘আই লাভ মোহাম্মদ’ পোস্টারের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে।
বরেলিতে জুমার নামাজের পর হাজারো মানুষ দরগাহ এবং মৌলানা খানের ফয়েজ এনক্লেভের সামনে জড়ো হন। পুলিশের অনুমতি ছাড়া মিছিল শুরু করার চেষ্টায় সংঘর্ষ শুরু হয়, এবং কিছু গোষ্ঠী পাথর ছুড়ে পুলিশ এবং দোকান-গাড়ির উপর হামলা চালায়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভাঙা কাচ, ছড়ানো জুতো এবং পাথরের স্তূপ রাস্তায় পড়ে আছে। আলমগিরিগঞ্জ, সিভিল লাইনস, বড়া বাজার এবং বাঁসমণ্ডিতে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, এবং ভয়ে স্থানীয়রা বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া ছিল দ্রুত এবং কঠোর। সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ (এসএসপি) অনুরাগ আর্য বলেছেন, “বেশিরভাগ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ছত্রভঙ্গ হয়েছে, কিন্তু কিছু অপরাধী আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।” পুলিশ লাঠিচার্জ করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে এবং ৫০-এরও বেশি সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নেয়। ডিআইজি অজয় কুমার সাহনি বলেছেন, “এটি একটি ষড়যন্ত্র।
আমরা সবাইকে চিহ্নিত করেছি এবং কঠোর ব্যবস্থা নেব।” মৌলানা তৌকির রজা খানকে গৃহবন্দী করার পর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের মোবাইল ফোন তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ ১১টি এফআইআর দায়ের করেছে, যাতে ২,০০০-এরও বেশি মানুষের নাম উল্লেখ আছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিনব সিং বলেছেন, বিএনএসএস-এর ১৬৩ ধারা অনুসারে বিক্ষোভের জন্য পূর্বানুমতি লাগে, যা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
শনিবারের ফ্ল্যাগ মার্চ ছিল ৫ কিলোমিটারের। এই মিছিল বিহারীপুর থানা, কুতুবখানা, আলা হাজরত দরগাহ, মালুকপুর এবং শহরের সবজি মার্কেট অতিক্রম করে গেছে। এতে পুলিশ, প্রাদেশিক সশস্ত্র কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি) এবং প্যারামিলিটারি বাহিনী অংশ নিয়েছে। এসপি সিটি মনুষ পারীক, এসপি সাউথ অনশিকা বর্মা, এসপি নর্থ মুকেশ চন্দ্র মিশ্র, সিটি ম্যাজিস্ট্রেট আলঙ্কার অগ্নিহোত্রীসহ ৫০ জনেরও বেশি ইন্সপেক্টর অংশগ্রহণ করেন।
দেশ জুড়ে 4G পরিষেবার সূচনা করলেন মোদী
মহিলা এসওজি সদস্যরাও মার্চে ছিলেন। ডিআইজি সাহনি বলেছেন, “আমরা স্থানীয়দের শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছি। কোনো কারফিউ লাগবে না, কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে ন্যায়ের চেয়ে কঠিন ব্যবস্থা হবে।” এই মার্চের মাধ্যমে পুলিশ শহরের সংবেদনশীল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়িয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ থেকে অতিরিক্ত অপরাধীদের চিহ্নিত করছে।