উত্তরপ্রদেশে একাধিক প্রকল্প! রবিবাসরীয় জরুরি বৈঠক যোগীর

উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শনিবার লখনউতে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন, যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই…

Uttar Pradesh developments

উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শনিবার লখনউতে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন, যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই বৈঠকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বিভাগীয় কমিশনার এবং সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন, যাঁদের মধ্যে অনেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়েছেন যে, জনসাধারণের কল্যাণের জন্য চলমান প্রকল্পগুলির সময়মতো সম্পূর্ণতা নিশ্চিত করতে হবে, কারণ এই প্রকল্পগুলি শুধুমাত্র জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে না, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও অবদান রাখবে।

   

বৈঠকে যোগী আদিত্যনাথ জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, জমি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণ বিতরণ প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

তিনি বলেন, “জনগণের সুবিধার জন্য প্রকল্পগুলি সময়মতো সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের সাপ্তাহিক পর্যালোচনা এবং কমিশনারদের প্রতি ১৫ দিনে অগ্রগতি পর্যালোচনা করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এই বৈঠকে গ্রেটার নয়ডায় ৩৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল এবং গোরখপুরে ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও জোর দিয়েছেন যে, প্রতিটি জেলায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলি স্থানীয় চাহিদা এবং সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তবায়িত হওয়া উচিত। উদাহরণস্বরূপ, তিনি লখনউকে আধুনিক উন্নয়ন এবং অযোধ্যার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সমন্বয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হারদৈ, রায়বেরেলি, উন্নাও, সীতাপুর এবং লখিমপুর খেরি জেলাগুলির স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যে, শহীদদের গ্রামে রাস্তা নির্মাণ এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।এই বৈঠকে উত্তরপ্রদেশের প্রতিরক্ষা শিল্প করিডরের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করা হয়েছে, যা লখনউ, কানপুর, ঝাঁসি, আলিগড়, চিত্রকূট এবং আগ্রা জেলায় বিস্তৃত।

Advertisements

এই করিডরে ২৪,০০০ কোটি টাকার ১৫০টিরও বেশি প্রতিরক্ষা উৎপাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা প্রায় ৪০,০০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। যোগী আদিত্যনাথ এই প্রকল্পকে রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মেরুদণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রী জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের উপর জোর দিয়েছেন।

তিনি জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা তাদের এলাকায় সরকারি প্রকল্প এবং কল্যাণমূলক কর্মসূচির সুবিধাগুলি জনগণের কাছে পৌঁছে দিন। তিনি বলেন, “জনগণের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং তাদের সমস্যার দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।” এছাড়াও, তিনি সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকার এবং বিপক্ষের গুজবে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এই বৈঠক উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের উন্নয়নমুখী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। তিনি জোর দিয়েছেন যে, প্রতিটি প্রকল্পে গুণগত মান এবং সময়মতো সম্পূর্ণতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল উত্তরপ্রদেশকে দেশের শীর্ষ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।” এই বৈঠকে জেলা প্রশাসনকে কৃষি, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং পানীয় জল সরবরাহের মতো খাতে নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, ঝাঁসি বিভাগে কৃষকদের ঔষধি ফসল উৎপাদনের জন্য উৎসাহিত করা এবং বিদ্যুৎ বিভাগকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এই পর্যালোচনা বৈঠক রাজ্যের উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য যোগী সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।

নায়াগ্রা ফলস টুর বাস দুর্ঘটনা: একজন ভারতীয়সহ ৫ জন নিহত

এটি উত্তরপ্রদেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মুখ্যমন্ত্রীর এই সক্রিয় পদক্ষেপ এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে রাজ্যে সুশাসন এবং উন্নয়নের একটি নতুন মডেল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।