জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে হুমকিতে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানাবার ঘোষণা যোগীর

Yogi Adityanath Vows Firm Response to Threats Against National Security উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (yogi adityanath) শনিবার বলেছেন, তাঁর সরকার জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকির…

yogi adityanath slames terorism

Yogi Adityanath Vows Firm Response to Threats Against National Security

   

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (yogi adityanath) শনিবার বলেছেন, তাঁর সরকার জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকির বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে। লখিমপুর খেরি জেলায় একটি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি তাঁর বক্তৃতার শুরুতে গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেন, যেখানে ২৬ জন, পর্যটক, নিহত হন।

মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ (yogi adityanath) বলেন, “আমি উত্তরপ্রদেশের জনগণের পক্ষ থেকে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার নিন্দা জানাচ্ছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি আমার সমবেদনা প্রকাশ করছি। সমাজে সন্ত্রাসবাদ বা অরাজকতার কোনো স্থান নেই।”

পহেলগাঁও হামলা ও জাতীয় প্রতিক্রিয়া

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বাইসরান মেডোতে নৃশংস এই হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন। এই ঘটনা ২০১৯ সালে ধারা ৩৭০ বাতিলের পর কাশ্মীরে সবচেয়ে মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলাগুলোর একটি। ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা (LeT)-এর প্রক্সি গ্রুপ দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)-কে দায়ী করেছে। হামলাকারীদের মধ্যে তিনজন পাকিস্তানি।

হামলার পর থেকে ভারত সরকার কঠোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট (ICP) বন্ধ করা, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য SAARC ভিসা ছাড় স্কিম স্থগিত করা, এবং ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা। এছাড়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪০ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যোগী আদিত্যনাথের বক্তব্য (yogi adityanath)

লখিমপুর খেরির জনসভায় যোগী আদিত্যনাথ (yogi adityanath) জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি তাঁর সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকির জবাব আমরা কঠোরভাবে দেব। উত্তরপ্রদেশ সরকার এই বিষয়ে কোনো আপস করবে না।” তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করার আহ্বান জানান।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “পহেলগাঁও হামলা কেবল কাশ্মীরের শান্তি ও পর্যটনের জন্যই ক্ষতিকর নয়, এটি আমাদের জাতীয় গর্ব ও ঐক্যের উপর আঘাত। আমরা এই ধরনের কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।”

কলিঙ্গ সুপার কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে কেরালা বনাম মোহনবাগান মহারণ

জাতীয় ও স্থানীয় প্রেক্ষাপট

পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। উত্তরপ্রদেশে, যেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইতিমধ্যে কঠোর, সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের দেশত্যাগ নিশ্চিত করতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। যোগী আদিত্যনাথের সরকার রাজ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।

জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী হামলার তদন্তে তৎপর রয়েছে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) পাঁচ সন্ত্রাসীকে চিহ্নিত করেছে, যাদের মধ্যে তিনজন পাকিস্তানি নাগরিক—আসিফ ফৌজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা। প্রত্যেকের জন্য ২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, ১৪ জন স্থানীয় জঙ্গির একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যারা পাকিস্তানি জঙ্গিদের সহায়তা করছে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলার পর জাতির উদ্দেশে বলেন, “এই হামলার জন্য দায়ী সন্ত্রাসীরা এবং তাদের ষড়যন্ত্রকারীরা অকল্পনীয় শাস্তির মুখোমুখি হবে। ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসীদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।” তিনি সন্ত্রাসবাদের অবশিষ্ট ঘাঁটি ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিক্রিয়া

উত্তরপ্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দ সহ বিশিষ্ট মুসলিম প্রতিষ্ঠানগুলো হামলার নিন্দা করেছে। দেওবন্দের ভাইস-চ্যান্সেলর মুফতি আবুল কাসিম নোমানি বলেন, “নিরীহ মানুষের উপর হামলা ইসলামের শিক্ষার পরিপন্থী। আমরা জাতীয় ঐক্য ও শান্তির পক্ষে।” লখিমপুর খেরিতে জনসভায় যোগী আদিত্যনাথও সকল সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

পহেলগাঁও হামলা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার উপর একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। যোগী আদিত্যনাথের (yogi adityanath) কঠোর বার্তা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের দৃঢ় অবস্থান প্রতিফলিত করে। উত্তরপ্রদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।