HomeBharatঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত! রাতের শিফটে মহিলাদের কাজে দ্বিগুণ মজুরির ঘোষণা যোগীর

ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত! রাতের শিফটে মহিলাদের কাজে দ্বিগুণ মজুরির ঘোষণা যোগীর

- Advertisement -

ভারতের মহিলা কর্মসংস্থানে নতুন ইতিহাস রচনা করল উত্তরপ্রদেশ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের মহিলারা এখন থেকে রাতের শিফটে কাজ করতে পারবেন, তাঁদের সম্মতি সাপেক্ষে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে “মহিলা সুরক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগের যুগান্তকারী পদক্ষেপ” হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই নীতিমালা অনুযায়ী, যারা রাতের শিফটে কাজ করবেন, তাঁদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপত্তা, পরিবহন সুবিধা, CCTV নজরদারি এবং দ্বিগুণ মজুরি নিশ্চিত করা হবে। শুধু তাই নয়, এই নীতি ২৯টি বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে—যা ভারতীয় শ্রমনীতিতে এক বিরল দৃষ্টান্ত।

   

👩‍🏭 নতুন যুগের সূচনা

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন,

“মহিলার ক্ষমতায়ন শুধু স্লোগান নয়, এটি আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি। মহিলাদের নিরাপত্তা, সম্মান ও সমান কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”

রাজ্য শ্রম দপ্তরের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, যে কোনও মহিলা কর্মী রাত ৭টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে কাজ করতে পারবেন, যদি তিনি স্বেচ্ছায় সম্মতি দেন এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাঁর নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত নীতি মেনে চলে।

🛡️ নিরাপত্তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা

রাতের শিফটে কাজ করা প্রতিটি মহিলা কর্মীর জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে:

  • কর্মস্থল থেকে বাড়ি পর্যন্ত নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা

  • CCTV নজরদারি ও জরুরি প্রতিক্রিয়া সিস্টেম (SOS)

  • মহিলা নিরাপত্তা অফিসার বা সুপারভাইজার

  • রাতের শিফটে অন্তত দুই বা তার বেশি মহিলা কর্মী একসঙ্গে উপস্থিত থাকার শর্ত

সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, কোনো সংস্থাই এই নির্দেশিকা উপেক্ষা করলে তাদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

💰 দ্বিগুণ মজুরি ও অতিরিক্ত সুবিধা

মহিলারা যদি রাতের শিফটে কাজ করেন, তবে তাঁদের দেওয়া হবে দ্বিগুণ মজুরি, সঙ্গে অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সুবিধা, ছুটি ও ইনসুরেন্স কভার।

এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হল মহিলা কর্মীদের আর্থিক স্বাধীনতা ও পেশাগত বিকাশের নতুন পথ খোলা।

⚙️ ২৯টি শিল্পে প্রযোজ্য

সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পক্ষেত্রেও কার্যকর হবে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • কেমিক্যাল ও ম্যানুফ্যাকচারিং

  • টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস

  • ইলেকট্রনিক্স অ্যাসেম্বলি

  • ফার্মাসিউটিক্যালস

  • রাবার ও প্লাস্টিক প্রসেসিং

    এই খাতে আগে রাতের শিফটে মহিলাদের কাজ করার অনুমতি ছিল না।

🌆 মহিলা কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস

লখনউ, নয়ডা ও কানপুরে কর্মরত বহু মহিলা এই সিদ্ধান্তকে “ঐতিহাসিক ও প্রেরণাদায়ক” বলে অভিহিত করেছেন।

নয়ডার এক আইটি কর্মী বলেন,

“দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই নীতির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এখন আমরা নিরাপত্তা ও সমান সুযোগ নিয়ে কাজ করতে পারব।”

🗣️ বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া

শ্রমনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ভারতের শ্রমক্ষেত্রে জেন্ডার ইনক্লুসিভিটির নতুন অধ্যায়

দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিক্স-এর অধ্যাপক ডঃ সুষমা তিওয়ারি বলেন,

“এই সিদ্ধান্ত মহিলা শ্রমশক্তিকে শুধু বাড়াবে না, বরং সমাজে মহিলাদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণকেও শক্তিশালী করবে।”

অন্যদিকে মহিলা নিরাপত্তা সংস্থাগুলিও মনে করছে, সরকার যে সমস্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করেছে, তা বাস্তবায়িত হলে রাতের শিফটে মহিলাদের নিরাপত্তা অনেকটাই বাড়বে।

📊 সরকারের দৃষ্টিকোণ

উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি শিল্পাঞ্চলে Women Safety Cell গঠন করা হবে, যারা এই নতুন নীতি বাস্তবায়ন ও তদারকির দায়িত্ব নেবে।

এই সেল কর্মীদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ, পরিদর্শন ও রিপোর্ট জমা দেবে শ্রম দপ্তরে।

🌍 জাতীয় প্রেক্ষাপটে তাৎপর্য

ভারতে এর আগে শুধুমাত্র কয়েকটি রাজ্য যেমন মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকে রাতের শিফটে মহিলাদের কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবার উত্তরপ্রদেশ সেই তালিকায় যুক্ত হল, যা ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য হওয়ায় এর প্রভাব আরও ব্যাপক হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে ভারতের শ্রম আইন ও কর্পোরেট নীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular