HomeBharatরোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ফের খারাপ খবর নিয়ে এলেন যোগী

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ফের খারাপ খবর নিয়ে এলেন যোগী

- Advertisement -

লখনউ: রাজ্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের জন্য খারাপ খবর নিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Action against Rohingya Bangladeshi )। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছেন। বিশেষত শহরাঞ্চলের পুর-সংস্থাগুলোর আওতায় কাজ করা সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশিদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রশাসনের কাছে এই বার্তা স্পষ্টঅবৈধ অনুপ্রবেশ আর কোনওভাবেই বরদাস্ত নয়।

সরকারের তরফে জানা গেছে, রাজ্যের সব পুরসভা, নগর নিগম, পৌরীয় সংস্থা এবং অন্যান্য নগর দপ্তরগুলিকে অবিলম্বে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা এলাকার প্রতিটি রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি শ্রমিক, দিনমজুর, ভিখারি, বর্জ্য সংগ্রহকারী বা অস্থায়ী কর্মীর নাম, ঠিকানা, কাজের ধরন এবং পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে। এই তালিকা প্রস্তুত হয়ে গেলে তা সরাসরি বিভাগীয় কমিশনার এবং ইন্সপেক্টর জেনারেলের (IG) কাছে জমা দিতে হবে।

   

ভারত-আফগান সম্পর্ক নিয়ে পাকিস্তানকে কড়া জবাব তালিবান মন্ত্রীর

এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য স্পষ্ট অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা, তাদের কাজের ক্ষেত্র ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর পূর্ণ নজরদারি চালানো, এবং প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, অনেক সময় গ্রাম বা ছোট শহরের তুলনায় নগর এলাকায় পরিচয়পত্র জাল করা বা ভুয়ো কাগজপত্র দিয়ে কাজ পাওয়া সহজ হয়। তাই প্রথম ধাপে নগর প্রশাসনকে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহে নামতে বলা হয়েছে।

এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের প্রতিটি বিভাগে ‘ডিটেনশন সেন্টার’ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে উত্তরপ্রদেশের সমস্ত কমিশনারি সদর শহরে এমন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। যেখানে নথিহীন এবং পরিচয় সঠিকভাবে যাচাই না হওয়া রোহিঙ্গা-বাংলাদেশিদের রাখা যাবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়।

প্রশাসনিক মহলে এমন কড়া পদক্ষেপের আলোচনা জোরদার। সরকারি সূত্রের দাবি, গত কয়েক বছরে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা বেড়েছে এবং তাদের একাংশ বেআইনি কাজকর্মেও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে এসেছে যেমন ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি, মানব পাচার চক্রে যুক্ত থাকা, বর্জ্য সংগ্রহের নামে নাশকতা সংক্রান্ত সামগ্রী পাচার করা ইত্যাদি। যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর একাংশ বলছে, প্রত্যেক বিদেশি অনুপ্রবেশকারীই অপরাধী নয়, অনেকেই যুদ্ধ ও নির্যাতন থেকে পালিয়ে এসেছে। তবে প্রশাসনের মত—মানবিকতা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, নিরাপত্তা আরও গুরুত্বপূর্ণ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, অবৈধ বিদেশিদের শনাক্তকরণের জন্য উত্তরপ্রদেশ দীর্ঘদিন ধরেই কড়া নীতি অনুসরণ করে আসছে। কিন্তু এবার যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি পুর-সংস্থাগুলোকে যুক্ত করেছেন, তাতে কাজের গতি ও কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, সরকারের এই পদক্ষেপ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘টার্গেটেড’ হতে পারে। বিজেপির পক্ষ থেকে এর জবাব—“এটি কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়, বরং ভারতের নিরাপত্তার স্বার্থে নেওয়া নীতি।”

এদিকে যোগী সরকারের প্রশাসনিক মহল বলছে, এই যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হলে রাজ্য নিরাপত্তা আরও মজবুত হবে এবং অবৈধ জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অপরাধের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে। ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হলে দীর্ঘদিন ধরে আটক থাকা বিদেশিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয়ও সহজ হবে। মোট কথা, যোগী আদিত্যনাথের এই সিদ্ধান্ত উত্তরপ্রদেশে বিদেশি অনুপ্রবেশ মোকাবিলায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল—যেখানে কঠোরতা, নজরদারি ও আইনি প্রক্রিয়াই হবে সরকারের মূল অস্ত্র।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular