দিল্লির বুকে (Delhi Flood) যেন ক্রমেই ধেয়ে আসছে প্রকৃতির রুদ্ররূপ। টানা কয়েকদিনের অঝোর বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়ে চলেছে যমুনা নদীর। বৃহস্পতিবার পুরোনো রেলওয়ে ব্রিজের নিচ দিয়ে যমুনার জল প্রবাহিত হয়েছে ২০৪.৮৮ মিটার উচ্চতায়, যা ২০৪.৫ মিটার বিপদসীমাকে অতিক্রম করেছে। এই অবস্থায় রাজধানীতে(Delhi Flood) বন্যার আশঙ্কা জোরালো হয়ে উঠেছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দিল্লি (Delhi Flood) ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আগামী দিনগুলোতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে যমুনার জলস্তর আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দিল্লি(Delhi Flood) প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাগুলি সক্রিয় করা হয়েছে। সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছে, নদী সংলগ্ন নিচু এলাকাগুলিতে না যাওয়ার জন্য।
ভয়ের বাতাবরণ স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে
যমুনার জলস্তর বিপদসীমা ছাড়ানোর খবরে নদীর আশপাশের এলাকাগুলিতে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে এবং প্রয়োজনে বাসিন্দাদের স্থানান্তর করার জন্য প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
দিল্লির (Delhi Flood) পুরসভা, সেচ দফতর ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে যমুনার সংলগ্ন এলাকায়—যেমন মজনু কা টিলা, কাশ্মীরি গেট, ইসিব্রিজ, বুরারির বিভিন্ন অঞ্চল এবং ওয়াজিরাবাদ।
এ শুধু দিল্লির সমস্যা নয়, অন্যান্য রাজ্যেও ভয়াবহ পরিস্থিতি
শুধু দিল্লি (Delhi Flood) নয়, লাগাতার বর্ষণে দেশের একাধিক রাজ্যেই জলযন্ত্রণা ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ এবং বারাণসীতে অতিবৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বারাণসীতে গঙ্গার জল বিপদসীমার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন ঘাট জলে তলিয়ে গিয়েছে এবং আপাতত নৌকা চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশেষ করে বারাণসীর দাশাশ্বমেধ ঘাট, মানমন্দির ঘাট এবং রাজেন্দ্র প্রসাদ ঘাট ইতিমধ্যেই গঙ্গার জল ঢুকে পড়ায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। পুণ্যার্থীদের ঘাটমুখো যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নদীর জল উঠে আসায় আশেপাশের দোকানপাট, আশ্রম ও বাসস্থানগুলি জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
হৃষীকেশে গঙ্গার জল ছুঁল শিবমূর্তি
উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। টানা বৃষ্টির জেরে গঙ্গার জলস্তর বেড়ে গিয়ে পরমার্থ নিকেতন আশ্রমের আরতির জায়গায় নদীর জল প্রবেশ করেছে। শিবমূর্তিতে পর্যন্ত গঙ্গার জল ছুঁয়ে যাওয়ার ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে আরতি-সহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে এবং পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি ও পরামর্শ
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে বিভিন্ন জায়গায় এনডিআরএফ (NDRF) এবং এসডিআরএফ (SDRF)-এর দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ শুরু হবে। স্থানীয় প্রশাসন বারবার জনগণকে অনুরোধ করছে নদী বা নালা সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে, এবং সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে।