নয়াদিল্লি: ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় মানহানির মামলাকে ফৌজদারী অপরাধ হিসেবেই ধরা হয়। তবে এবার সম্ভবত এই ধারা বদলাতে চলেছে। সোমবার জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) এক অধ্যাপিকার মানহানির মামলার শুনানিতে বড় বয়ান দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ বলে, “মনে হয় মানহানির মামলাকে অপরাধের তকমামুক্ত করার সময় এসে গিয়েছে। আর কতদিন এটাকে এই ভাবে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে?”
প্রসঙ্গত, একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা অমৃতা সিংহ মানহানির মামলা দায়ের করেন। অধ্যাপিকার অভিযোগ। ২০০ পাতার একটি নথিতে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য এবং ভুল তথ্য প্রকাশ করেছে ওই অনলাইন সংবাদমাধ্যম। ২০১৭ সালে নিন্ম আদালত, দিল্লি হাইকোর্ট পেরিয়ে বর্তমানে সেই অভিযুক্ত অনলাইন সংবাদমাধ্যম বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। তাঁদের হয়ে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। সোমবার বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে সহমত পোষণ করেন।
মামলার প্রেক্ষাপট
অধ্যাপিকা অমৃতা সিংহ অভিযোগ করেন যে, সংবাদপোর্টালে (News Portal) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে অধ্যাপিকা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) একটি শিক্ষকদলকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ২০০ পৃষ্ঠার একটি ডসিয়ার প্রস্তুত করেছিলেন। ওই ডসিয়ারের শিরোনাম ছিল ‘জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি: দ্য ডেন অব সিসেশানিজম অ্যান্ড টেররিজম’। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়কে “সাংগঠনিক যৌন র্যাকেটের আখড়া” বলেও উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, এই ডসিয়ার জেএনইউ প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। তাতে কিছু অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অবক্ষয়ী সংস্কৃতি’কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন এবং দেশের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয় মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে ওই সংবাদ পোর্টালকে নিন্ম আদালত তলব করে। তারপর হাইকোর্ট হয়ে অবশেষে অনলাইন সংবাদমাধ্যমটি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
