বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়ার অগ্রসরতা: ইউক্রেন সংকটের গভীর কারণ

কেন রাশিয়া আরও ভূখণ্ড চায়” — এই প্রশ্নের উত্তর ইতিহাসের পটভূমি (Russia-Ukraine War)এবং ভূগোলের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থেকে উঠে আসে। “ভূগোলই ভাগ্য” এই বিখ্যাত উক্তিটি ১৪শ…

Why the Conflict in Ukraine May Spread: Russia's Desire for More Territory

কেন রাশিয়া আরও ভূখণ্ড চায়” — এই প্রশ্নের উত্তর ইতিহাসের পটভূমি (Russia-Ukraine War)এবং ভূগোলের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থেকে উঠে আসে। “ভূগোলই ভাগ্য” এই বিখ্যাত উক্তিটি ১৪শ শতকের তিউনিশিয়ান-জাতি আরব দার্শনিক ইবন খালদুনের। খালদুন নিজে একাধিক রাজ্যে ভ্রমণ করেছিলেন এবং বহু সুলতান এবং রাজাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। ১৪০১ খ্রিষ্টাব্দে, তিনি বিশ্বের বিখ্যাত বিজয়ী তামারলেইনের(Russia-Ukraine War) সাথে খোলামেলা আলোচনা করেছিলেন এবং ইতিহাসে নিজের স্থান সম্পর্কে কথা বলেছিলেন।

১৪শ শতকের শেষের দিকে, তামারলেইন (Russia-Ukraine War) দক্ষিণ এশিয়ার তুর্কি স্থলভূমি থেকে বেরিয়ে এসে একটি বিশাল সাম্রাজ্য গঠন করেছিলেন, যা আনাতোলিয়া (Russia-Ukraine War) থেকে দামেস্ক, ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, এবং এর মধ্যে কেন্দ্রীয় এশিয়া এবং ক্রিমিয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সাম্রাজ্যের আয়তন শুধুমাত্র ১৩শ শতকের মঙ্গোল সাম্রাজ্যের কাছে পরাজিত হয়েছিল, যা চীন, কোরিয়া, দক্ষিণ রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপকেও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। খালদুন সম্ভবত লক্ষ করেছিলেন যে, কেন্দ্রীয় এশিয়ার চরিত্র এবং ভূগোলই এসব ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত শাসকদের তৈরি করেছে এবং বিশ্বের দুই বৃহত্তম স্থলভিত্তিক সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।

   

খালদুনের মতে, একবার যদি দক্ষিণ ইউরোপ এবং কেন্দ্রীয় এশিয়া একত্রিত হয়, তাহলে তা একটি বিশ্বজয়ী বা কমপক্ষে বিশ্ব শাসকের পথ তৈরি করতে বাধ্য। ইতিহাসের নিরিখে, কেন্দ্রীয় এশিয়ার যাযাবর জাতিরা তাদের প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতায় আটকা পড়ে থাকলেও, তারা এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চলে শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। এর মধ্যে দিল্লি সুলতানত, মুঘল সাম্রাজ্য, মিশরের মামলুক, ইরানের গজনবids, সেলজুক এবং সাফাভিদ, এবং অটোমান সাম্রাজ্য যেমন নামকরা সাম্রাজ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এখানে ইতিহাসের এক বড় পাঠ রয়েছে যা খালদুন তাঁর অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে পড়তে পেরেছিলেন—”ভূগোলই ভাগ্য”। এই বার্তা সুস্পষ্টভাবে বোঝায় যে, যেখান থেকে শাসকগণ উঠে এসেছে এবং যেসব স্থান তাদের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সুবিধাজনক, সে স্থানই তাদের বড় শাসক বা বিজয়ী বানিয়ে তোলে। তেমনি, রাশিয়ার জন্য, ইউক্রেনে যেটি শুরু হয়েছে, তা কখনোই শুধুমাত্র ইউক্রেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাশিয়ার ভূগোল এবং ঐতিহ্যগতভাবে শাসন করার প্রবণতা তাকে আরও বৃহত্তর অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করার দিকে চালিত করবে।

রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকালে, এটি স্পষ্ট যে তার ইতিহাস এবং ভূগোল তাকে সম্প্রসারণের দিকে তাড়িত করছে। যদিও ইউক্রেনের যুদ্ধ ইউক্রেনের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ থাকার কথা ছিল, তবে রাশিয়া তার ভূখণ্ড সম্প্রসারণের উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া, তামারলেইন বা চেঙ্গিস খানের মতো, একে একে তার প্রতিবেশী দেশগুলিকে গ্রহণ করতে চাইছে এবং তার ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এটি কেবল এক দেশ বা একটি অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক কৌশল যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাব ফেলবে।

অতএব, ইউক্রেনে যা কিছু শুরু হয়েছে, তা শুধু একটি স্থানীয় সংঘর্ষের চেয়ে অনেক বড় কিছু হতে পারে। রাশিয়া তার ঐতিহ্য, ভূগোল এবং ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে আরও বড় ভূখণ্ড দখল করার দিকে মনোনিবেশ করছে। ইতিহাস থেকে শেখা যায়, “ভূগোলই ভাগ্য”, এবং রাশিয়ার জন্য, তার ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে এটি একান্তই প্রাসঙ্গিক।