দেশের অন্যতম টেক-হাব গুরগাঁও কেন কাঁদে বর্ষায়?

নয়াদিল্লি: কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই কার্যত বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভারতের অন্যতম টেক-হাব গুরগাঁওয়ে। তবে রাজধানীর অনতিদূরের এই স্মার্ট সিটির বর্ষায় এই পরিস্থিতি কেন? বস্তুত, দুই…

দেশের অন্যতম টেক-হাব গুরগাঁও কেন কাঁদে বর্ষায়?

নয়াদিল্লি: কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই কার্যত বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভারতের অন্যতম টেক-হাব গুরগাঁওয়ে। তবে রাজধানীর অনতিদূরের এই স্মার্ট সিটির বর্ষায় এই পরিস্থিতি কেন? বস্তুত, দুই দশক আগেও আরাবল্লির পাদদেশে জঙ্গল, তৃণভূমিতে ভরা এক গ্রাম ছিল গুরুগ্রাম বা বর্তমানের গুরগাঁও। কিন্তু উন্নয়ন আর নগর সম্প্রসারণের গুঁতোয় বর্তমানে আকাশচুম্বী ইমারত বিশিষ্ট এক ঘিঞ্জি কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত হয়েছে দেশের এই অন্যতম টেক-হাব।

ঠিকাদারি-দৌরাত্মে জলনিকাশি থেকে শুরু করে সঠিক, বাসযোগ্য নগর পরিকল্পনা, গুরগাঁওয়ের কপালে জোটেনি কোনটাই। উপরন্তু আরাবল্লির ধাপে তৈরি হওয়া আধুনিক এই নগরীর ঢাল হরিয়ানা এবিং দিল্লির সীমানায় অবস্থিত গুরুগ্রাম জেলার সাহিবি নদীর দিকে। দুর্ভাগ্যক্রমে, যেটিকে বর্তমানে নদীর পরিবর্তে বড় নর্দমা হিসেবেই বেশি চেনে এলাকার মানুষ। হরিয়ানা তথা দিল্লি এবং গুরুগ্রামের ভূ-মানচিত্র দেখলেই বোঝা যায়, জল নিকাশির জন্য এই সাহিবি নদী কতটা উল্লেখযোগ্য।

   

শুধু নদী নর্দমায় পরিবর্তন হওয়াই নয়। এই “উন্নত” নগরীর প্রতি বর্ষায় বেহাল দশার পিছনে আরও এক বড় কারণ হল, শহরের অধিকাংশ বড় জলাশয় বুজিয়ে গগনচুম্বি ইমারত স্থাপন। ১৯৯০ এর দশকে ব্যাপক ভাবে উন্নয়নের জোয়ার দেখা যায় গুরুগ্রামে।

সেইসময়কার মানচিত্রে একাধিক পুকুর, বড় জলাশয়ের দেখাও মেলে। বৃষ্টির অতিরিক্ত জল হয় সাহিবি নদী অথবা ওই জলাশয়গুলিতে গিয়ে জলা হত। যার ফলে শহরে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হত না। সমগ্র গুরুগ্রাম মিলিয়ে প্রায় ৭৫ টি জলাভূমি ছিল। লাগাম ছাড়া নির্মাণ, সঠিক নিকাশি ব্যবস্থার অভাবকেই বর্ষাকালে গুরগাঁও-এর দুরবস্থার কারণ হিসেবে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisements

তাহলে সমাধান কি?

আর্বান প্ল্যানিং বিশেষজ্ঞ মিশ্রা ব্যাটস-এর মতে সরকার এবং পুরসভার গাফিলতি এর জন্য বিশেষভাবে দায়ী। অন্যদিকে, আরও এক বিসেশজ্ঞের মতে, বৃষ্টির জল নিকাশের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। জল ধারণ করতে পারবে এরকম বড় পুকুর বা লেক খনন করতে হবে। নয়ত অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে জল ঠিক নিজের গতিপথ বের করে নেবে এবং অপরিকল্পিতভাবে তৈরি হওয়া নগরীর নির্মাণ, জনজীবন জলের গতিপথে এলে তা ভেসে যাবেই!