ইয়েমেনের বিমানবন্দরে হামলা, কোনও মতে বাঁচলেন ‘হু’ প্রধান গেব্রিয়েসাস

ইয়েমেনের রাজধানী সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে ইজ়রায়েলি (Israel-Houthis Conflict) যুদ্ধবিমানের হঠাৎ আক্রমণ বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার এই হামলার সময়, বিশ্ব…

WHO Chief Tedros Adhanom Ghebreyesus Says He Was at Yemen Airport Targeted by Israeli Strikes

ইয়েমেনের রাজধানী সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে ইজ়রায়েলি (Israel-Houthis Conflict) যুদ্ধবিমানের হঠাৎ আক্রমণ বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার এই হামলার সময়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস  (Israel-Houthis Conflict) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তখন রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিমানে উঠতে যাচ্ছিলেন।

ঠিক সেই সময় বিমানবন্দরটিতে (Israel-Houthis Conflict) একাধিক ‘এয়ার টু সারফেস’ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে। যদিও এই হামলায় তিনি অক্ষত থাকেন, হামলায় অন্তত তিন জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন, বলে আল-মাসিরাহ টেলিভিশন জানিয়েছে, যা হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী পরিচালিত একটি সংবাদ মাধ্যম।

   

এই হামলার পেছনে একটি দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের ইতিহাস রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইজ়রায়েল (Israel-Houthis Conflict) ও হুথি গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান উত্তেজনা। গত সপ্তাহে, হুথি বাহিনী ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘প্যালেস্টাইন-২’ ছুড়ে দিয়ে ইজ়রায়েলকে (Israel-Houthis Conflict) সতর্ক করেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায়, ইজ়রায়েলি বিমানবাহিনী ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের (Israel-Houthis Conflict)  বিভিন্ন স্থানে একাধিক হামলা চালায়, যার মধ্যে সানা বিমানবন্দর এবং হোদেইদাহ শহরের বিদ্যুৎ কেন্দ্রও ছিল। ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন, “আমার সেনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হুথিদের সমস্ত পরিকাঠামো ধ্বংস করতে।”

ইয়েমেনের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ২০১৪ সালে, হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করার পর, সৌদি আরবের মদতপুষ্ট ইয়েমেন সরকার হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এদিকে, ইরানও শিয়া মুসলিম গোষ্ঠী হুথিদের সমর্থন দিয়ে আসছে, যাতে তারা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হতে পারে। একদিকে সৌদি আরবের সহায়তায় ইয়েমেন সরকারের বাহিনী, অন্যদিকে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এই সংঘাতটি একদিকে মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে পশ্চিম এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্যও পরিবর্তিত হয়েছে।

ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। হুথি গোষ্ঠী, যে দীর্ঘদিন ধরে ইয়েমেনে শক্তি বিস্তার করেছে, এখন লোহিত সাগরগামী বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকেও লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। এতে ভারতীয় জাহাজগুলোও আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে, গাজা ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি হামলা শুরুর পর, হুথি বাহিনী তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিসর আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ইয়েমেনের পরিস্থিতি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহলের কাছেও গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে, যা পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে। বিশেষভাবে, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমেরিকা এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো হুথিদের শিয়ারদের সমর্থন দেয়ার অভিযোগের কারণে ইরানকে দোষারোপ করছে। আবার, সৌদি আরবের ইয়েমেন সরকারকে সমর্থন করা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে।

যেহেতু সানা এখনও হুথিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তাই ইয়েমেনের সরকার ও হুথিদের মধ্যে আলোচনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো স্পষ্ট দিশা দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি যদি এভাবেই চলতে থাকে, তবে পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিরতা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।